অভিজিৎ ঘোষ, সোনাপুর: বিপদের আশঙ্কা ছিল আগেই, এবার যেন সেই আশঙ্কা সত্যি হতে চলেছে। নদীর ভাঙনে বড় বিপদের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে আলিপুরদুয়ার-১ এর উত্তর সোনাপুর এলাকায়। নদী আরেকটু এগোলে এবার হয়তো বাড়ি গিলে ফেলবে, সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে গ্রামবাসীদের। বুড়িতোর্ষার ভাঙনের ফলে প্রায় এক হাজার বাসিন্দার জীবন সংকটের মুখে।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৭ সাল থেকে ওই এলাকায় নদীভাঙন প্রথমে নজরে আসে। তারপর থেকে প্রতি বছরই নদী বড় হচ্ছে। গত কয়েকদিনে বৃষ্টিতে নদীর সেই ভাঙন আরও বেড়েছে। স্থানীয় যুবক ঝুটন পাল বলেন, ‘কয়েক বছর আগে থেকেই নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের তরফে কোনও উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। এবার যেভাবে নদী ভেঙেছে আর ৫০ মিটার ভাঙলেই গ্রামের মূল অংশ ভেসে যাবে। আশা করছি, এবারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নদীভাঙন ঠেকানোর কোনও ব্যবস্থা করবেন।’
আলিপুরদুয়ারের সব ব্লকের নদীগুলিরই এখন এই অবস্থা। ফালাকাটা ব্লকের মুজনাই ও ইকতি নদীর ভাঙনে বিঘা বিঘা জমি এখন নদীগর্ভে। অন্যদিকে, জয়গাঁর ছোট মেচিয়াবস্তিতে তোর্ষা পাড় এলাকার তিনটি বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে। সাতটি পরিবার অপেক্ষায় রয়েছে ঘরছাড়া হওয়ার। বুড়িতোর্ষা নদীর ভাঙনের প্রসঙ্গে নদীর চর কেটে বালি-পাথর বিক্রি করায় এই দুর্দশা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এলাকাবাসীর অভিযোগ, অনেকদিন ধরেই ওই এলাকায় নদীর চর কাটা হয়। কিন্তু প্রশাসন এসব বন্ধের কোনও ব্যবস্থাই করেনি। স্থানীয়রা এই নদীভাঙন ঠেকানোর জন্য বাঁধ বা বোল্ডার পাইলিংয়ের দাবি জানিয়েছেন। তবে স্থানীয়দেক সেই দাবি কতদিনে পূরণ হয়, সেটাই দেখার। এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কথায়, বোর্ড গঠন না হওয়া পর্যন্ত কোনও কাজ করা সম্ভব নয়।
ওই পঞ্চায়েতে সদ্য জয়ী রিতা দাস বলেন, ‘গ্রাম পঞ্চায়েতে নতুন বোর্ড গঠন না হওয়ায় পঞ্চায়েত সদস্যদের হাতে ক্ষমতা আসেনি। নদীভাঙনের সমস্যা আমি শুনেছি। ওই ভাঙন আটকানোর জন্য যে যে দপ্তরে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে সেখান যাওয়া হবে।’ এখনও বর্ষার মরশুম শেষ হয়নি। ফলে ফের বৃষ্টি হলে নদী আরও ভাঙার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না উত্তর সোনাপুরের বাসিন্দারা। তাঁদের আশঙ্কা, দ্রুত কোনও ব্যবস্থা না গ্রহণ করলে বড় বিপদ হতে পারে। কয়েক বছর ধরেই বর্ষা এলে ভাঙনের ভয়ে এলাকায় থাকতে হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।