কলকাতা: এগরা বিস্ফোরণকাণ্ডে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। ঘটনার ভয়াবহতার ছবি দেখে শিউরে উঠলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।
পাশাপাশি আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিস্ফোরণের যা ‘ভয়াবহতা’, তাতে বিস্ফোরক আইনে মামলা রুজু করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সিআইডি এ বিষয়ে খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে। বিস্ফোরক আইনে মামলা হলে আইন মেনে তদন্ত করতে পারবে এনআইএ-ও। শুভেন্দু অধিকারীর করা একটি জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে আদালত বৃহস্পতিবার একথা জানায়।
এদিন ঘটনার ছবি দেখে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম মন্তব্য করেন, ‘হে ভগবান! কী হয়েছে! মৃতদেহগুলি একেবারে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে।’ এরপরই হাইকোর্ট বিস্ফোরণ নিয়ে রাজ্যের রিপোর্ট তলব করে। পাশাপাশি এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি করা হয়। সে নিয়ে মামলা করার আবেদনও গতকাল মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুল এলাকায় একটি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে গ্রামের রাস্তায় ছিন্নভিন্ন হয়ে দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিস্ফোরণে অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়। জখম হন বেশ কয়েকজন। কী করে এমন ঘটনা ঘটল, তা জানতে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, এই ঘটনায় এগরা থানার আইসিকে শোকজ করতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। অভিযুক্ত ভানু কীভাবে জামিন পেলেন, তা জানতে চান তিনি। এরপরই আইসিকে শোকজ করা হয়।
অপরদিকে, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আগে থেকেই ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মঙ্গলবার থেকেই এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। সেই সময় দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দু’জন বারুদ সংগ্রহ করে ওই কারখানায় নিয়ে আসত। তবে মূল অভিযুক্ত ভানু বাগ এখনও পলাতক। সূত্রের খবর, তাঁর খোঁজে ওডিশায় হানা দিয়েছে পুলিশ। তদন্ত করতে এলাকায় পৌঁছোয় পুলিশ কর্তা জ্ঞানবন্ত সিং। আসে ফরেন্সিক দল। এদিকে এই ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি করেন শুভেন্দু। গতকাল বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শনে যান তিনি। বিজেপির তরফে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিষয়টি লঘু করে দেখানোর অভিযোগ তোলা হলেও তৃণমূলের পালটা দাবি, বিস্ফোরণের তথ্যপ্রমাণ সহ ফরেন্সিক রিপোর্ট আসার আগে বিস্ফোরক আইনের ধারা দিলে মামলা দুর্বল হয়ে যাওয়ারই আশঙ্কা থাকে।