সানি সরকার, শিলিগুড়ি: বৃষ্টিহীন উত্তর। হালকা বৃষ্টির সঙ্গে তুষারপাতে ভিজছে সিকিমের উত্তর প্রান্ত।কিন্তু ‘পোড়াকপাল’ দার্জিলিং পাহাড়ের। দেখা নেই তুষারপাতের, গায়েব বৃষ্টিও। এমনকি সমতল যখন কুয়াশার চাদরে মোড়া, তখন রোদ ঝলমলে শৈলরানি। প্রাণবন্ত এমন আবহাওয়ায় ‘ঘুমন্ত বুদ্ধ’ কাঞ্চনজঙ্ঘাকে চোখের সামনে দেখতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত পর্যটকরা, কিন্তু আক্ষেপ দূর হচ্ছে না তুষারপাতের জন্য।কপাল ভালো হলে আগামী বুধবার এই আক্ষেপ দূর হতে পারে নতুন পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস, নতুন সপ্তাহেই ভোল বদল ঘটবে পাহাড়ে। দার্জিলিং হবে আরও শীতল। দুয়ারে যখন পৌষ সংক্রান্তি, তখন সমতলেও অব্যাহত দমকা হাওয়া।
আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতিতে স্পষ্ট, পশ্চিমী হাওয়া এবং কুয়াশা বিদায় নিতে পারে দু’দিনের মধ্যে। কিন্তু শীতের দাপট কমবে না এখনই। বরং কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর ভূমধ্যসাগর থেকে আসা উত্তুরে হাওয়া শীতের খেলা জমিয়ে দেবে আরও। দিনের তাপমাত্রা তো বটেই, রাতের তাপমাত্রাও কমবে হুহু করে। আগামী তিনদিন উত্তরবঙ্গের সর্বত্রই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আরও ২-৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হ্রাস পাবে বলে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস। আগামী সোমবার পৌষ সংক্রান্তি। সেদিন কেমন থাকতে পারে আবহাওয়া? আবহবিদরা বলছেন, ‘একেবারে হিমশীতল’।
সাধারণত কুয়াশার জন্য সূর্যতাপ বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছাতে পারে না। ফলে দিনের তাপমাত্রারও বৃদ্ধি ঘটে না। কিন্তু উত্তুরে হাওয়ার দাপট থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় মালদা বাদে দিনের তাপমাত্রা প্রায় দুই ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড পতন ঘটেছে উত্তরের সর্বত্র। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুসারে, মঙ্গলবার মালদার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২১.৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। বুধবার যা বেড়ে দাঁড়ায় ২৩.৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। পাশের শহর বালুরঘাটে অবশ্য ২.২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড কমে বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা দাঁড়ায় ২০.০ ডিগ্রিতে। শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার থেকে জলপাইগুড়ি- তাপমাত্রা পতনের ছবিটা সর্বত্র প্রায় একই। ফলে বিপর্যস্ত জনজীবন।
এরইমধ্যে রাতের তাপমাত্রার পতন যদি ঘটে, তবে শীত আরও জমাট বাঁধবে বলে মনে করছেন আবহবিদরা। বছরের শুরুর দিন থেকে শুরু হওয়া শীত এখনই যে পাততাড়ি গোটাবে না, তা আবহাওয়ার মতিগতিতেই স্পষ্ট। কেননা, দুয়ারে অপেক্ষা করছে আরও একটি শক্তিশালী পশ্চিমী ঝঞ্ঝা।
আবহাওয়া দপ্তরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলছেন, ‘শীতের স্থায়িত্ব আরও কিছুদিন থাকবে। নতুন পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে দার্জিলিং পাহাড়ের উঁচু এলাকায় বৃষ্টি ও তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।