হরিশ্চন্দ্রপুর: শাসকদলের ২৭তম প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সোমবার মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বি অংশের দলের বিধায়ক এবং দলের ব্লক সভাপতির মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভরাডুবির জন্য দলের ব্লক সভাপতি মানিক দাসকে দায়ী করে পচা আপেলের সঙ্গে তুলনা করেছেন চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ। নাম না করে ব্লক সভাপতিকে আক্রমণ শানিয়েছেন যুব সভাপতিও। পঞ্চায়েতের প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। এদিকে, আবার দুটি পৃথক অনুষ্ঠানেই উপস্থিত থাকতে দেখা গেল স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যকে। লোকসভা ভোটের আগে আরও একবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তাঁরা।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের চাঁচল বিধানসভার অন্তর্গত (বি) জোনে এদিন দুটি পৃথক প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিধায়ক নিহাররঞ্জন ঘোষ কুশিদা অঞ্চলের কাপাই চণ্ডিতে প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান করেন। অন্যদিকে, ব্লক সভাপতি মানিক দাস কুশিদা অঞ্চলেরই ভাটল এলাকায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। আর এই দুটি অনুষ্ঠানেই উপস্থিত থেকে পতাকা উত্তোলন করতে দেখা যায় জেলা পরিষদ সদস্য মর্জিনা খাতুনকে। এদিন মঞ্চ থেকে ব্লক সভাপতি মানিক দাসকে উদ্দেশ্যে করে তীব্র কটাক্ষ করেন বিধায়ক নিহার ঘোষ। তিনি বলেন, ‘একটি ঝুড়িতে একটা পচা আপেল থাকলে তা বাকি আপেলগুলোকেও পচিয়ে দেয়।’ পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট বিতরণ নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন তিনি। অভিযোগ, ‘প্রার্থী হিসেবে বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতি স্বাক্ষর নিয়ে যাঁদের নাম পাঠানো হয়েছিল, পরে ব্লক সভাপতি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাঁদের নাম পরিবর্তন করে দেন। তাই এই জোনের চারটি অঞ্চল হাত ছাড়া হয়েছে তৃণমূলের।’
এদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ (বি) ব্লক তৃণমূলের যুব সভাপতি শেখর সাহাও নাম না করে তীব্র কটাক্ষ করেন মানিক দাসকে। তিনিও পঞ্চায়েতের টিকিট দেওয়া নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। পরবর্তীতে বিধায়ক নিহাররঞ্জন ঘোষ সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘যেহেতু মানিক দাসের জন্য ভরাডুবি তাই তাঁকে পচা আপেল বলা হয়েছে। আর মানিক দাস যেটা অনুষ্ঠান করছেন সেটা প্রকৃত তৃণমূলের অনুষ্ঠান নয়। শুধু পয়সা কামানোর জন্য তিনি সেটা করছেন।’
যদিও বিধায়কের মন্তব্য প্রসঙ্গে মানিক দাস জানান, রাজ্যের নির্দেশে তিনি এই অনুষ্ঠান করছেন। যেখানে প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে দুঃস্থ মানুষদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করা হচ্ছে। পাশাপাশি জেলা পরিষদ সদস্য মর্জিনা বলেন, ‘আমাকে দুটি অনুষ্ঠানেই ডাকা হয়েছিল, তাই আমি গিয়েছি। বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির মধ্যে কী সমস্যা, সেটা জানি না।’
অন্যদিকে, মন্ত্রী তজমুল হোসেনের নেতৃত্বে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ এ অংশে পৃথকভাবে আরেকটি দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হয়। সেখান থেকে দলীয় কর্মীদের তিনি আগামী লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন। মন্ত্রীর এই কর্মসূচিতে হাজির ছিলেন দলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বকসি।