উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের কড়া অবস্থানের পরই বোধহয় রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে জটিলতা কাটতে চলেছে। সেই লক্ষ্যেই এদিন রাজভবনে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল। বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রীর কথায় অচলাবস্থা কাটার সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন বিকেলে রাজভবনে যান মুখ্যমন্ত্রী। সন্ধে নাগাদ রাজভবন থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সমস্যার সমাধান নিয়ে প্রায় ১ ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে। বৈঠক ভাল হয়েছে। পেন্ডিং বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোনো কন্ট্রোভার্সি আর হবে না বলেই মনে হয়।” মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরই সমস্যা সমাধান নিয়ে আশাবাদী শিক্ষামহল। তবে রাজ্যপালের প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি।
রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপাল বিবাদ গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। একসঙ্গে ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপাল উপাচার্য নিয়োগ করায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। কিন্তু হাইকোর্ট রাজ্যপালের সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দেয়। এরপর সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। গত ৬ অক্টোবরের সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানিতে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তর ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, যে রাজ্যপাল আর কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। এমনকী যে উপাচার্যদের রাজ্যপাল নিয়োগ করেছেন, তাঁদের আর্থিক ক্ষমতাও কেড়ে নেয় শীর্ষ আদালত। একইসঙ্গে তিনপক্ষকে মুখোমুখি বসে সমস্যা মেটানোর পরামর্শও দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
রাজ্যপালের আইনজীবী হাজির না থাকায় সেই বৈঠক হয়নি। কিন্তু গত ১ ডিসেম্বর রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী কিংবা শিক্ষামন্ত্রীর আলোচনার উপরে জোর দিয়ে রীতিমতো ডেডলাইন বেঁধে দেয় বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তর ডিভিশন বেঞ্চ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত নামের চূড়ান্ত খসড়া তালিকা তৈরির জন্য সব পক্ষের আইনজীবীদের একসঙ্গে বসার নির্দেশও দেয় বেঞ্চ। এই বিষয়ে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামানিকে উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। বলা হয়েছে, ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে একটি খসড়া সার্চ কমিটি তৈরি করে শীর্ষ আদালতের কাছে জমা দিতে হবে। মনে করা হচ্ছে এই নির্দেশের পরই রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বসে সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করেছেন।