পূর্ণেন্দু সরকার, জলপাইগুড়ি: শনিবার প্রথম দফায় জলপাইগুড়ির প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিজেপি (Jalpaiguri BJP)। কিন্তু তাতে কী! প্রার্থী ঘোষণার আগেই জেলা বিজেপিতে ক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি কালিয়াগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সৌমেন রায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁকে জলপাইগুড়ি লোকসভা (Lok Sabha Election 2024) কেন্দ্রের প্রার্থী করা নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে। এতেই চটে লাল বিজেপির জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী। তিনি জানিয়েছেন, কোনও দলবদলু প্রাক্তন নেতাকে আমি চিনি না। জলপাইগুড়িতে অন্তত এইসব সুবিধাবাদী নেতাদের কোনও ঠাঁই হবে না। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে বর্তমান সাংসদ ডাঃ জয়ন্ত রায়ের নাম প্রস্তাব করেছেন বাপি৷ এই প্রস্তাবে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারেরও সায় রয়েছে। এই অবস্থায় অন্য কাউকে প্রার্থী করা হলে যে তাঁর পাশে জেলা নেতৃত্ব থাকবে না তা বাপি ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন। নির্বাচনের মুখে দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে আশায় অনেকটাই অস্বস্তি বাড়িয়েছে শীর্ষ নেতৃত্বের।
সৌমেন রায় প্রথম দিকে তৃণমূলেই ছিলেন। ভোটে বিজেপির টিকিটে জিতে কালিয়াগঞ্জ থেকে বিধায়ক হন। জেতার পর ফের তৃণমূলে চলে যান। তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতিও করা হয়। তিনি কোচবিহারের বাসিন্দা হলেও আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটাতেই বেশি থাকতেন। সম্প্রতি তিনি পুনরায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বিজেপি সূত্রে খবর, সৌমেনকে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে প্রার্থী করা হতে পারে।
শনিবার জেলা পার্টি অফিসে প্রধানমন্ত্রীর জলপাইগুড়ি জেলার সফর নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে বাপি বলেন, ‘সৌমেন রায় আমার জেলার বাসিন্দা বা বিধায়ক নন। তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। ২০২১ সালে যখন জেলায় হাজার হাজার বিজেপি কর্মী তৃণমূলের অত্যাচারে ঘরছাড়া হয়েছিলেন, পুলিশের হাতে মিথ্যে অভিযোগে গ্রেপ্তার হতে হয়েছিল। তৃণমূলের সেই সন্ত্রাসের সময় সৌমেন রায় তৃণমূলেই ছিলেন। আজ তিনি বিজেপিতে ফিরেছেন। এইসব দলবদলুদের জেলায় কোনও জায়গা নেই।’
এর আগে রাজ্য সভাপতি জলপাইগুড়ি এসে জয়ন্ত রায়ের মতো সাংসদদেরই দরকার বলে জানিয়েছিলেন। প্রার্থী হিসেবে জয়ন্ত রায়কে চান বলে সাফাই দেন বাপি। জেলা সভাপতির কথায়, ‘জয়ন্ত রায় যে কাজ করেছেন অতীতে এমন কাজ কোনও সাংসদ করতে পারেননি। তাঁর কাজের খতিয়ান পুস্তিকা আকারে ছাপিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারে নামব। এখন শুধুই ঘোষণার অপেক্ষায় আছি।’
এই ব্যাপারে সৌমেন অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বর্তমান সাংসদ বলেন, ‘কী কাজ করেছি নিজের লোকসভা এলাকায় তা দল ও জনসাধারণ জানেন। এখন দল কী করে সেটা দলের সিদ্ধান্ত।’