উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে হড়পা বান দেখা দিয়েছে তিস্তা নদীতে। সিকিম ও উত্তরবঙ্গের তিস্তা সংলগ্ন এলাকার মানুষকে সতর্ক করেছে প্রশাসন। সিকিম এবং দার্জিলিং পাহাড় পেরিয়ে তিস্তা সমতলে প্রবেশ করছে জলপাইগুড়ি জেলায়। ঘটনার খবর পেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যসচিবকে বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। উত্তরবঙ্গের দিকে ইতিমধ্যেই রওনা হয়ে গিয়েছেন মন্ত্রীসভার সিনিয়র সদস্য এবং আইএএস আধিকারিকেরা। পাশাপাশি, সিকিমের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ট। বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং।
সিকিমে হড়পা বানে নিখোঁজ ছাউনির ২৩ জন সেনা জওয়ান। সিকিম ও উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মমতা। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানের জেরে সিকিমে ২৩ জন জওয়ানের খবর শুনে অত্য়ন্ত উদ্বিগ্ন। আমরা পাশে রয়েছি। আমাদের সরকারের কাছে সাহায্য চাওয়া হলে আমরা সবধরনের সহায়তা করব। আমি উত্তরবঙ্গ প্রশাসনকেও অতি সতর্ক থাকতে বলেছি। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রস্তুতি কতদূর, তা জানার জন্য মুখ্য়সচিবকে যত দ্রুত সম্ভব যোগাযোগ করতে বলেছি। কালিম্পং, দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
Deeply concerned on getting the news of 23 soldiers missing after a flash flood in Sikkim which followed a cloudburst in the region. While expressing solidarity and promise of assistance from our government side if sought on this matter, I also urge all concerned in North Bengal…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) October 4, 2023
বুধবার ভোরে উত্তর সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। এর জেরে জলস্তর ধরে রাখতে পারেনি বাঁধ। ফলে লোনক হ্রদ ফেটে পড়ে সেই জল তিস্তার বুক দিয়ে বইতে শুরু করে। এর জেরে সেই সময় সিকিমে তিস্তার জলস্তর ১৫ থেকে ২০ ফুট পর্যন্ত বেড়ে যায়। নদীর খুব কাছাকাছি থাকা সেনাছাউনি সম্পূর্ণ ভেসে গিয়েছে। নিখোঁজ ছাউনির ২৩ জন সেনা জওয়ান। জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে সেনার ৪১টি গাড়ি। এই পরিস্থিতি দেখে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তিস্তার হড়পা বানে বহু সাধারণ মানুষও নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন। জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে বহু ঘরবাড়ি, রাস্তা। বাংলা-সিকিমের মধ্যে সংযোগরক্ষাকারী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ভেসে গিয়েছে।
তিস্তার বুক দিয়ে বিপুল পরিমাণ জল ক্রমশ এগিয়ে আসছে উত্তরবঙ্গের দিকে। ফলে জলপাইগুড়ি জেলা সহ গোটা উত্তরবঙ্গেই বন্যা পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কত মানুষ নিখোঁজ হয়েছেন বা ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, সে সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কোনও খবর মেলেনি। সামগ্রিক ভাবে তিস্তায় লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। নদীর আশপাশের নীচু এলাকা থেকে মানুষজনকে সরানোর কাজও শুরু হয়েছে।
এদিকে, সিকিমের বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং। তিনি বলেন, ‘ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সিংথামে বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়েছে।’