পূর্ণেন্দু সরকার ও রাহুল মজুমদার, জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি: রানিনগর (Raninagar) শিল্পাঞ্চলে ইন্ডিয়ান অয়েলের এলপিজি গ্যাস প্ল্যান্টের (LPG Gas Plant) কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল শিল্পাঞ্চলের তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা (TMC Union Leader) উত্তম বর্মনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, উত্তমের নির্দেশে শুক্রবার থেকে ট্রাকচালকরা ধর্মঘটে যাওয়ায় প্ল্যান্ট থেকে সিলিন্ডার লোডিং করে সরবরাহ করার কাজ বন্ধ রয়েছে। এর জেরে পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। পুরো বিষয়টি জানিয়ে শনিবার জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) কোতোয়ালি থানায় উত্তমের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নর্থবেঙ্গল অ্যান্ড সিকিম এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক কৌশিক সরকার।
তাঁর বক্তব্য, ‘এই মাসে প্রচুর ছুটি থাকায় আমরা ওভারটাইম করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। প্রচুর ব্যাকলগ থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু উত্তম কাজে বাধা দিচ্ছেন। শাসকদলের নেতা এভাবে কাজে বাধা দিলে কী করে চলবে?’ যদিও উত্তম তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
উত্তম বর্মন তৃণমূলের এসসি-এসটি সেলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাসের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত৷ অভিযোগ, গত জানুয়ারি মাসে রানিনগর প্ল্যান্টে শ্রমিকদের বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলে একদিনের জন্য প্ল্যান্টে কাজ বন্ধ করেছিলেন খোদ কৃষ্ণ। তারপর তা মিটে যায়। এবার উত্তম বর্মনের বিরুদ্ধে প্ল্যান্টে কাজকর্মে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করলেন ডিস্ট্রিবিউটাররা।
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার খান্ডবাহালে উমেশ গণপতের বক্তব্য, ‘আমার কাছে কোনও চিঠি এখনও আসেনি। চিঠি এলে আমি অবশ্যই দেখব।’
রানিনগর শিল্পাঞ্চলে এলপিজি প্ল্যান্ট থেকে উত্তরবঙ্গ ছাড়াও সিকিম, ভুটান এবং নিম্ন অসমে সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়। প্রায় ২০০ ট্রাক সিলিন্ডার পরিবহণের কাজে যুক্ত। অভিযোগ, কয়েকদিন ধরেই স্থানীয় আইএনটিটিইউসি নেতা উত্তম ট্রাকে সিলিন্ডার লোডিংয়ের কাজে বাধা দিচ্ছেন। ফলে প্ল্যান্টে ট্রাক ঢুকতে পারছে না। এখন উৎসবের মরশুম ও নির্বাচনি কাজের জন্য সিলিন্ডারের চাহিদা বেশি রয়েছে। তৃণমূল নেতার বাধায় গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহের কাজ ট্রাকচালকরা বন্ধ করে দিয়েছেন বলে ডিস্ট্রিবিউটারদের অভিযোগ। উত্তম বলেন, ‘আমি প্ল্যান্টে যাইনি। কাউকে কাজ বন্ধ রাখার কথাও বলিনি। গেটের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। পরীক্ষা করে দেখা হোক।’
শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৬টা থেকে রাত সাড়ে ন’টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। প্ল্যান্টে সিলিন্ডার ট্রাকে তোলার জন্য শ্রমিকরা কাজ করেন। ট্রাকচালকরা এই সময়টা কাজ করেন। ওভারটাইম বা ছুটির দিনে কাজ করলে মজুরি ও বাড়তি মজুরি দেওয়া উচিত। ট্রাকচালকদের তা দিতে রাজি হয়নি ডিস্ট্রিবিউটাররা বলে অভিযোগ।
রানিনগর বটলিং প্ল্যান্টের ম্যানেজার গৌরী শংকরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। আইএনটিটিইউসি’র জেলা সভাপতি তপন দে বলেন, ‘জরুরি পরিষেবা এইভাবে বন্ধ করা উচিত নয়। রবিবার থেকে যাতে ট্রাকচালকদের ধর্মঘট উঠে যায় সেই আবেদন রাখছি। তবে শ্রমিকদের ছুটির দিনে কাজ করালে ওভারটাইম দেওয়া উচিত।’