শিলিগুড়ি: নির্বাচনি প্রচারে বেরিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল দার্জিলিংয়ের সাংসদ তথা এই কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে দ্বিতীয়বার প্রার্থী হওয়া রাজু বিস্টকে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। মংপুতে প্রচার শেষে এদিন সন্ধ্যায় ঝংকার মোড় থেকে জনসংযোগ যাত্রা শুরু করেন পদ্মপ্রার্থী। রাতে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সন্তোষীনগরে প্রচারে গেলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
ঘটনা প্রসঙ্গে অবশ্য বিজেপির দাবি, দলীয় প্রার্থীর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলার অমরনাথ সিং এবং তাঁর মেয়ে প্রাক্তন কাউন্সিলার দুর্গা সিংয়ের নেতৃত্বে শাসকদলের কর্মী-সমর্থকরা গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে বলেও দাবি গেরুয়া শিবিরের। বিস্টের পাশাপাশি বিজেপি দলীয়ভাবে বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানাচ্ছে বলে সূত্রের খবর। পালটা এই ঘটনা সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে দাবি করেছে তৃণমূল। শাসকদলের নেতারা বিজেপির তোলা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বিস্টের সঙ্গে থাকা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলার অনীতা মাহাতো বলছিলেন, ‘তৃণমূলের গুন্ডারা এদিন যে ঘটনা ঘটিয়েছে, সেটা ক্ষমার অযোগ্য। নিকাশি ব্যবস্থা কেন আধুনিক নয়, কেন পুর পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে না, এরকম প্রশ্ন তুলছে ওরা। ১০ বছর তো ওয়ার্ডটি তৃণমূলের দখলে ছিল, কী করেছে নিজেরা। পুর পরিষেবা বেহাল হলে তো তার দায় তাদেরই নিতে হবে।’
যদিও তৃণমূলের সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে প্রাক্তন কাউন্সিলার দুর্গা সিং বললেন, ‘ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কোনওভাবেই যুক্ত নয়। ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাঁচ বছর এলাকায় রাজু বিস্টকে দেখা যায়নি, কোনও পরিষেবা মেলেনি। সাধারণ মানুষ তো সাংসদকে কাছে পেলে প্রশ্ন তুলবেনই।’
সমতলে সমস্যা হলেও পাহাড়ের কর্মসূচিতে কোনও ঝামেলায় পড়তে হয়নি রাজু বিস্টকে। মোর্চা সুপ্রিমো বিমল গুরুংয়ের উপস্থিতিতে মংপুতে এদিন একটি সভা করে বিজেপি। সেখানে সিঙ্কোনা প্ল্যানটেশনের বেহাল অবস্থার জন্য বিস্ট রাজ্য সরকারকে দায়ী করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘তৃণমূলের দূরদর্শিতার অভাবে মর্যাদা হারাচ্ছে সিঙ্কোনা।’
এদিন শিলিগুড়িতে ঝংকার মোড় থেকে জনসংযোগ যাত্রা কর্মসূচিতে যোগ দেন বিজেপি প্রার্থী বিস্ট। সন্তোষীনগরে তিনি পৌঁছাতেই ‘গো ব্যাক’ স্লোগান শুরু হয়। তাতে কর্ণপাত না করেই এগিয়ে যেতে থাকেন বিস্ট। এমন সময় বিক্ষোভকারীরা তাঁর গাড়ি ঘিরে ফেলেন। বিজেপির অভিযোগ, সাংসদকে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। গাড়ির বনেটে কয়েকজন থাপ্পড় মারতে থাকে। ওইসময় বড় অঘটনের আশঙ্কায় বিস্টের নিরাপত্তারক্ষীরা গাড়ি সমেত তাঁকে ব্যারিকেড করে কিছুটা দূরে নিয়ে যান।
যদিও প্রকাশ্যে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেননি বিস্ট। তিনি পরে বলেন, ‘যাঁরা আমাকে স্বাগত জানিয়েছেন, তাঁদের সংখ্যাটা বেশি ছিল।’ তবে এদিনের ঘটনা নিয়ে তিনি এবং পৃথকভাবে বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।