প্রণব সূত্রধর, আলিপুরদুয়ার: লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election 2024) ঘোষণা হতেই আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar) প্রাথমিকে প্রধান শিক্ষক (Primary Head Teacher) নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিল। প্রশাসনের ‘ধীরে চলো’ নীতির জেরে এই ঘটনা বলে বিরোধীদের অভিযোগ। লোকসভা ভোট শুরুর আগে নিয়োগ সম্ভব কিনা তা নিয়ে জানতে আগ্রহী চাকরি প্রার্থীরা। দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছিল ডিপিএসসি। কিন্তু তাতে কোনও কাজ না হওয়ায় সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা। আলিপুরদুয়ারে প্রায় ৮৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬০৬টিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এবছরের প্রথমদিকে এব্যাপারে আশ্বাসও দেওয়া হয়। কিন্তু এতদিনেও তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় জেলার শিক্ষামহলে ক্ষোভ ছড়াচ্ছে। শনিবার দেশজুড়ে ১৮তম লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও প্রায় তিন মাস পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) সুজিত সরকার এপ্রসঙ্গে বলেন, ‘এবিষয়ে ডিপিএসসির সঙ্গে কথা বলা হবে।’
এব্যাপারে বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার ভিত তৈরি হয়। সেক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ খুবই জরুরি। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় গোটা শিক্ষা ব্যবস্থায় তার প্রভাব পড়ছে।’ ডিপিএসসি এবং শিক্ষক সংগঠনগুলি সূত্রে খবর, জেলার ৮৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৬০৬টিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে কাজ শুরু হয়েছে। জানুয়ারিতেই সার্কেলে প্যানেল তৈরি হয়। আবেদনের সাতদিনের মধ্যেই এসআই অফিসে সিনিয়ারিটির ভিত্তিতে তৈরি প্যানেল প্রকাশিতও হয়। জানুয়ারিতে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা নেওয়া হয়। সে হিসাবে চূড়ান্ত প্যানেল প্রকাশ ও কাউন্সেলিং হলে নিয়োগ সম্ভব। কিন্তু তা না হওয়ায় থমকে গিয়েছে নিয়োগ প্রক্রিয়া। এনিয়ে সবাই সরব হয়েছেন।
এরই মধ্যে লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার জেরে শনিবার থেকেই আদর্শ আচরণ বিধি কার্যকর হয়েছে। ফলে, প্রধান শিক্ষক নিয়োগে জটিলতা দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে ভোট প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া অবধি এব্যাপারে আগানো সম্ভব নয় বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহলের একাংশ। অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক সংঘের জেলা যুগ্ম সম্পাদক সুমন্ত সিংহের প্রশ্ন, ‘প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এতদিন কেন থমকে আছে? ভোট ঘোষণা হওয়ায় প্রধান শিক্ষক নিয়োগ কি আদৌ সম্ভব?’ নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায় ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘গোটা প্রক্রিয়াটি ইচ্ছে করে দেরি করা হয়েছে।’ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি কৌশিক সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। আর এক নেতা দেবব্রত পাল এনিয়ে স্পষ্ট কিছু জানাননি। ডিপিএসসির চেয়ারম্যান পরিতোষ বর্মন ও আলিপুরদুয়ার আসনের তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ চিকবড়াইকের দাবি, শীঘ্রই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।