কোচবিহার, ১৭ ফেব্রুয়ারি: উত্তমকুমারের নায়িকা, কোচবিহারের মেয়ে অঞ্জনা ভৌমিক (Anjana Bhowmick) চলে গেলেন। শনিবার দক্ষিণ কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। কোচবিহারের কলেরপাড় এলাকার বাসিন্দা তথা সুনীতি অ্যাকাডেমির এই প্রাক্তনীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে কোচবিহারে।
মহানায়ক উত্তমকুমারের সঙ্গে একসময় দাপিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। চৌরঙ্গি, নায়িকা সংবাদ থেকে শুরু করে থানা থেকে আসছি-র মতো একাধিক সিনেমা (Cinema) রয়েছে তাঁর। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি মহাশ্বেতা নামে একটি ছবি করেন। তাঁর বড় মেয়ে নীলাঞ্জনার সঙ্গে টলিউডের (Tollywood) নায়ক যিশু সেনগুপ্তের বিয়ে হয়েছে।
কোচবিহারের পাটাকুড়া এলাকায় ছিল অঞ্জনা ভৌমিকের বাড়ি। এখানে তাঁর বাবা, মা এবং ভাই-বোনেরা থাকতেন। তবে তাঁর বেশিরভাগ সময় কেটেছে শহর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে কলেরপাড় এলাকায়। সেখানে তিনি জ্যাঠামশাই এবং জেঠিমার সঙ্গেই থাকতেন। জেঠিমাকে তিনি বড়মা বলে ডাকতেন। এই বড়মাই ছিলেন তাঁর সবচেয়ে কাছের ও ভালোবাসার মানুষ।
১৯৬১ সালে অঞ্জনা কোচবিহার সুনীতি অ্যাকাডেমি থেকে উচ্চমাধ্যমিক (H.S) পাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতায় চলে যান। কলকাতার সিঁথির মোড়ে তাঁরা বাড়ি করেছিলেন। অঞ্জনার আগে নাম ছিল আরতি। সিনেমায় নামার আগে নাম পরিবর্তন করে অঞ্জনা রাখেন। ১৯৬০-’৭০-এ তাঁর অভিনয় সিনেমাপ্রেমীদের মন জয় করেছে। তবে ১৯৮০ সালের পর তিনি সিনেমা থেকে অনেকটাই সরে যান।
শনিবার কলেরপাড়ের বাড়িতে বসে তাঁর মামাতো ভাই গৌরকুমার দে জানালেন, ১০ বছর আগে দিদির বড়মা মানে আমার পিসি অসুস্থ থাকায় তিনি দেখতে এসেছিলেন। নায়িকা হওয়ার পরেও যখন কোচবিহারে আসতেন সকলকে মাতিয়ে রাখতেন। আমার বয়স যখন সাত বছর তখনও দিদি এসে আমাদের সঙ্গে মাঠে গিয়ে খেলাধুলো করেছেন। ২০১২ সাল নাগাদ পিসিকে দেখতে এসেছিলেন। সঙ্গে বোনকে নিয়ে এসেছিলেন। এই বাড়িতে চারদিন ছিলেন।
কোচবিহারের বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব কল্যাণময় দাস জানালেন, তাঁর মা প্রয়াত আরতিদেবীর সঙ্গে অঞ্জনা ভৌমিক উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। দুজনে স্কুলে এক বেঞ্চে বসতেন। এক নাম থাকায় দুজনে খুব ভালো বান্ধবী ছিলেন। তাঁর মায়ের গিটার বাজানো শুনতে ভালোবাসতেন অঞ্জনা।