উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। বীরভূমের জনসভা থেকে সন্দেশখালি কাণ্ড নিয়ে পালটা বিজেপিকে দুষছেন মুখ্যমন্ত্রী। সন্দেশখালির (Sandeshkhali) ঘটনায় কেউ দোষী থাকলে তাদের শাস্তি দেওয়ার ‘কথা দিলেন’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি মমতা আজকে ফের ‘বিরোধীদের ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব’ তুলে ধরলেন জনসভায়। যদিও সন্দেশখালি কাণ্ডে গ্রেপ্তার হয়েছে তৃণমূলের দুই নেতা উত্তম সরদার ও শিবু হাজরা। এদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার মামলা রুজু হয়েছে।
বীরভূমের জনসভা থেকে এদিন কড়া ভাষায় বিরোধীদের আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্দেশখালি কাণ্ডে ‘বিরোধীদের ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব’ তুলে ধরলেন। এই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘একটা ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটা ঘটানো হয়েছে। প্রথমে ইডিকে পাঠিয়েছে, তারপর বিজেপি ঢুকেছে। আর কিছু মিডিয়া ঢুকেছে। ঢুকে তিলকে তাল করছে। শান্তির পরিবর্তে আগুন লাগাচ্ছে। আমি সবাইকে বলতে চাই, যার যা অভিযোগ রয়েছে, আমি অফিসার পাঠাব, তারা শুনবে। যদি কেউ মনে করে যে কারও কাছ থেকে কেউ কিছু নিয়েছে, সবটাই ফেরত দেওয়া হবে। এটাও মাথায় রাখবেন। আমি যখন করি, আমি তা করি।’
মুখ্যমন্ত্রী আজ আরও বলেন, ‘কোনও মহিলা আজ পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের করেনি। এফআইআর করেনি। আমি পুলিশকে বলেছি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করুন। আমাদের ব্লক সভাপতিও গ্রেফতার হয়েছে। এমনকী ভাঙড়ের আরাবুলও তো গ্রেফতার হয়েছে। তোমরা কতজনকে গ্রেফতার করেছ? আমরা কি পারি না কাউকে গ্রেফতার করতে? গদ্দারদের গ্রেফতার করতে পারি না? একটু সময় দিচ্ছি। সুতো ছাড়ছি। গদ্দারদের চুরি, দুর্নীতির মামলা … সবাইকে চোর বলে। চোরের ঠাকুরদা।’
বিরোধীদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে এদিন মমতা বলেন, “ফাঁকা কলসির আওয়াজ বেশি। দিল্লি হ্যাঁ বললে ধিতাং ধিতাং করে নৃত্য করে। আর দিল্লি না বললে মন খারাপ করে ঘরে বসে থাকে। দিল্লির দয়ায় রাজনীতি করে। বাংলাকে ভালোবাসে না। তারা বাংলা বিরোধী। এরা মহিলা বিরোধী। ওরা দলিত বিরোধী, কৃষক বিরোধী।’
উল্লেখ্য, রেশন দুর্নীতি মামলায় তল্লাশি চালাতে গিয়ে শাহজাহান শেখের অনুগামীদের হাতে আক্রান্ত হন সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ। ঘটনার পর থেকেই পলাতক। পরবর্তীতে সন্দেশখালিতে আন্দোলন গড়ে তোলেন গ্রামের মহিলারা। মহিলাদের অভিযোগ, গ্রামের মহিলাদের ওপর অত্যাচার চালাতো তৃণমূল নেতা উত্তম সরদার ও শিবু হাজরা। এক মহিলার জবানবন্দির ভিত্তিতে শনিবার বসিরহাট আদালতে গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার মামলা করা হয় উত্তম সরদার ও শিবু হাজরার বিরুদ্ধে। এদিকে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে গুরুতর ধারা যুক্ত হতেই বদলি করা হয় বারাসত রেঞ্জের ডিআইজি সুমিত কুমারকে। এই আবহে প্রশ্ন উঠছে, শাসকদলের নেতার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার জেরেই কি সরকারের রোষে পড়লেন এই পুলিশ আধিকারিক। যদিও নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, এটি রুটিন বদলি।