চাকুলিয়া: বয়সের ভার তো আছেই। তার ওপর দুশ্চিন্তা ও রোগের কারণে দুজনের শরীর থরথর করে কাঁপে। তবুও বেঁচে থাকার তাগিদে এখনও লড়াই করে যাচ্ছেন চাকুলিয়া সাহাপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ডািঙ্গপাড়া এলাকার বাসিন্দা উমর আলি ও বিবি দেফুর। বিভিন্ন সরকারি অফিস থেকে দুয়ারে সরকার- েকাথায় আবেদন করেননি ওই দম্পতি? তঁাদের সে কাতর আবেদনে সাড়া দেননি কেউ। বয়সের ভারে নুয়ে পড়ছে শরীর অথচ আজও পেলেন না বার্ধক্য ভাতা ও একটি আবাস েযাজনার ঘর।
বাধ্য হয়েই ভিক্ষের থলি হাতে নিয়ে অন্যের কাছে হাত পাতেন তঁারা। যদিও গোয়ালপোখর-২ ব্লকের বিডিও শ্যামল মণ্ডলের বক্তব্য, ‘তাঁদের এমন পরিস্থিতির কথা আমার জানা ছিল না। খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টি দেখছি।’ বড় অভাবের সংসার উমরের। সব থেকেও যেন কিছুই নেই। তিন ছেলে ও তিন মেয়ে থাকলেও এই বুেড়া বয়সে তঁাদের দেখার মতো কেউ নেই। প্রায় ৮০ বছর বয়স। এই বয়সে শ্রমিকের কাজ করার মতো সক্ষমতাও তঁার নেই। তবু স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের কোনও সুনজর তাঁদের ওপর পড়ল না। নেতাদের কাছ থেকেও গালভরা প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই মেলেনি।
ভোট আসে ভোট যায়, উমরের কুড়েঘরে হঁা মেলে তাকিয়ে থাকে অভাব। করুণ কণ্ঠে উমর বলেন, ‘হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে ছেলেমেয়েদের বড় করেছিলাম। আশা ছিল বুড়ো বয়সে তারা আমাদের দেখাশোনা করবে। কিন্তু বিয়ের পর বাবা-মাকে ওরা বেমালুম ভুলে গিয়েছে। ন্যূনতম বার্ধক্য ভাতা আর বৃষ্টির জল, রোদ, বাতাস থেকে বাঁচার জন্য একটি আবাস যোজনার ঘর চেয়েছিলাম। আজও পেলাম না।’ হতাশা ও বুকভরা বেদনা নিয়ে দিন কাটছে ওই অসহায় দম্পতির। বিবির কথায়, ‘চক্ষুলজ্জার কথা ভেবে এতদিন কারও কাছে হাত পাতিনি। অভাব অনটনে কী করব ভেবে কূল না পেয়ে এখন অন্যের দুয়ারে যেতে হচ্ছে। তাতে শরীর নানা ধরনের সমস্যায় পড়ছে।’
সাহাপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ওই দম্পতির অসহায় অবস্থার কথা শুনে দুঃখ প্রকাশ করেন। প্রধানের আশ্বাস, ‘তঁাদের কাগজপত্রের কোনও অসংগতি থাকলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। এলাকার অনেক অসহায় মানুষ আছেন তাঁদের আবাস যোজনার তালিকায় নাম ওঠেনি। তাঁদের নাম েতালার চেষ্টা চলছে।’