বালুরঘাট: দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ঐতিহ্যের নানা আকর। কিন্তু জেলার ভাস্কর্য, স্থাপত্যকে হেরিটেজ কমিশন সেভাবে তুলে ধরেনি বলে আক্ষেপ দক্ষিণ দিনাজপুর হেরিটেজ সোসাইটির। গত রবিবার শুরু হয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য সপ্তাহ। যা আগামী ২৫ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এরই মধ্যে সোমবার বালুরঘাট মুখ্য ডাকঘর থেকে সোসাইটির সদস্যরা স্থানীয় স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ২০০টি পোস্ট কার্ডে খোলা চিঠি পাঠালেন। চিঠিতে দক্ষিণ দিনাজপুরের ঐতিহ্যকে সংরক্ষণের দাবি করা হয়েছে।
জেলায় কুশমণ্ডি ব্লকের পীরপাল, একডালা দুর্গ, আতা শাহের দরগা, গঙ্গারামপুরের বাণগড়, খাঁপুরের সিংহ বাহিনী মন্দির, বালুরঘাট নাট্য মন্দিরের মতো বহু পুরোনো ও ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু সেগুলো এখনও হেরিটেজ বা ঐতিহ্যের তকমা পায়নি। কালের গতির সঙ্গে এই সমস্ত ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়ার মুখে। নিদর্শনগুলিকে সংরক্ষণ করার কোনও উপায় সাধারণ মানুষের হাতে নেই। অন্যদিকে, সরকারি উদাসীনতার অভিযোগও রয়েছে হাজার। মাঝে জেলার পর্যটনকে উৎসাহ দিতে জেলা প্রশাসনের তরফে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও ঐতিহ্য সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা হয়নি। রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের তরফে কুশমণ্ডি থানাকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে ঠিকই। ব্যাস, ওই পর্যন্তই। তারপরে আর কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। বাণগড়ে খননকার্য শুরু হলেও মাঝপথে তা থমকে রয়েছে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তৎপরতারও দাবি জানিয়েছে হেরিটেজ সোসাইটি।
সংস্থার সম্পাদক দীপক মণ্ডল বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যানকেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর জন্য আমরা পোস্টকার্ডকে বেছে নিয়েছি। কারণ পোস্ট কার্ড বর্তমানে ঐতিহ্যের দাবি রাখে। তার সঙ্গে আমরা মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র, জেলাশাসককে পোস্টকার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থাপত্য, নিদর্শনকে হেরিটেজ ঘোষণা করার দাবি তুলেছি। সার্বিকভাবে দেখতে গেলে আমরা আজও অবহেলিত। জেলার ভগ্নপ্রায় হেরিটেজের দাবিদার জায়গাগুলি সংরক্ষিত না হলে আগামী প্রজন্মের কাছে সব অজানা থেকে যাবে।’ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাতে এসে স্কুল পড়ুয়া আদ্রিতা ভৌমিক বলে, ‘বন্ধুবান্ধব মিলে অভিভাবকদের সঙ্গে জেলার হেরিটেজ বাঁচাতে এগিয়ে এসেছি। এদিন আমরা পোস্টকার্ডে চিঠি লিখে ডাকবাক্সে ফেলেছি।’