অরুণ ঝা, দাড়িভিট: দাড়িভিট মামলায় (Daribhit case) হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বাড়তি অক্সিজেন গেরুয়া শিবিরে। এই রায়ে দাড়িভিট ইস্যুতে ফের একবার মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের। এমনটাই দাবি করছেন মৃতদের পরিবার থেকে শুরু করে বিজেপি (BJP) প্রার্থী ও নেতারা।
সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন মৃত রাজেশ সরকারের বাবা নীলকমল। বাড়ির দাওয়ায় বসে তাঁর প্রশ্ন, ‘এতদিন হল কই মমতা তো আমাদের খোঁজ নিতে এলেন না? আর এখন ভোটের জন্য ঝড়বিধস্ত জলপাইগুড়িতে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে না দাঁড়িয়ে রাজনীতি ও ধামসা-মাদল নিয়ে ব্যস্ত।’
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ দাড়িভিট মামলা এনআইএ’র (NIA) হাতেই থাকার পাশাপাশি দ্রুত সিআইডি-কে মামলার নথি তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ বহাল রেখেছে। সেইসঙ্গে মৃতদের এবং আহতকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। মামলার নথি এনআইএ-কে হস্তান্তর না করায় রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিল সিঙ্গল বেঞ্চ। তারপরেই তড়িঘড়ি ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল রাজ্য সরকার।
গেরুয়া শিবিরের বাড়তি অক্সিজেন পাওয়ার প্রশ্নে তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালার জবাব, ‘কে অ্যাডভান্টেজ নেবে বা অক্সিজেন পাবে সেটা বড় কথা নয়, আইন তো আইনের পথেই চলবে। আর মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে যাঁরা কটাক্ষ করছেন সেটা তাঁদের নিজস্ব রুচির ব্যাপার।’
চলতি সপ্তাহেই দাড়িভিটে গুলিতে মৃত রাজেশ ও তাপস বর্মনের সমাধিতে মাথা ঠুকে ইসলামপুরে প্রচার শুরু করেছিলেন বিজেপি প্রার্থী কার্তিক পাল। তিনি বলেন, ‘আইনি পথে বারবার মুখ পুড়লেও রাজেশ-তাপসের ন্যায়বিচার করতে রাজি নয় তৃণমূল সরকার। আইনি জয় যেমন পরিবারগুলি পেয়েছে, তেমনি মানুষও তৃণমূলকে উচিত শিক্ষা দেবে।’
দাড়িভিট যে এবারও ভোটে বিজেপির কাছে অন্যতম ইস্যু তা নেতৃত্ব ইতিমধ্যে স্পষ্ট করে দিয়েছে। রাজনৈতিক স্তরে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে দাড়িভিট ইস্যু বিজেপির অন্যতম শক্তিস্থল হয়ে উঠেছিল। ২০২৪ সালের আগে আদালতের এনআইএ তদন্তের নির্দেশ শাসকদলকে আগেই ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিল। নতুন করে ডিভিশন বেঞ্চে সরকারের হার গেরুয়া শিবিরকে আরও চাঙ্গা করে দিয়েছে বলে চর্চা তুঙ্গে। সঙ্গে মৃত ছাত্রদের পরিবারগুলিও বিচারের আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে।
রাজেশের বাবা নীলকমল বলেন, ‘আমরা সত্যের জয় চেয়ে আসছি। কিন্তু মমতা পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে আসছেন। আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে স্বাগত জানাই।’ তাঁর ক্ষোভ হল, আজও সরকার কিছু ক্ষতিপূরণ দেয়নি। আজ পর্যন্ত দাড়িভিটে এসে খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেননি মুখ্যমন্ত্রী।