বর্ধমান: বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে মৃতদেহ পাচারের চেষ্টার ঘটনায় ভিন রাজ্যের যোগ! ঘটনায় এখনও মূল চক্রী আরামবাগ মেডিকেলের কর্মী প্রদীপ মল্লিক অধরা থাকলেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫ জনকে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, দেহগুলি উত্তরাখণ্ডে পাচারের পরিকল্পনা ছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে অভিনাশ মল্লিকের বাড়ি দার্জিলিং জেলার মাটিগড়া থানার কালামজোটে। ধৃত অপরজন বর্ধমানের সাধনপুর নিবাসী নন্দলাল ডোম অ্যানাটমি বিভাগেরই কর্মী। এছাড়াও গ্রেপ্তার হয়েছে বর্ধমানের ষাড়খানা গলি নিবাসী ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরী (এফএসএল) বিভাগের কর্মী গৌতম ডোম। বাকি দুই ধৃত শম্ভু মিত্র ও সুমন মিত্র সম্পর্কে বাবা ও ছেলে। তাঁরা বর্ধমানের বাবুরবাগ এলাকার বাসিন্দা। শম্ভু মেডিকেলের অ্যাম্বুল্যান্স চালক এবং সুমন শববাহী গাড়ির চালক। পুলিশের দাবি, ধৃতরা জিজ্ঞাসাবাদে এই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এদিন পাঁচজনকেই বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার আমন দীপ জানিয়েছেন, ঘটনার মূল চক্রী পলাতক। তাঁকে ধরা গেলে এই ঘটনার পেছনে থাকা সব রহস্যের কিনারা করা সম্ভব হবে। সে একসময়ে বর্ধমান মেডিকেলের কর্মী ছিলেন। যদিও এবিষয়ে বর্ধমান মেডিকেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনও আধিকারিকের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
প্রসঙ্গত, গতকাল বর্ধমান মেডিকেল থেকে মৃতদেহ পাচার করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে শববাহী গাড়ির চালক সহ বেশকয়েক জন। তারা গাড়িতে করে তিনটি দেহ পাচারের আগেই তাদের কীর্তি হাসপাতালের নিরাপত্তা কর্মীদের নজরে চলে আসে। তারাই তিনটি দেহ সহ গাড়িটিকে আটক করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ৭ জনকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। জানা গিয়েছে, মূল চক্রী তিনটি মৃতদেহ ছাড়াও ভিসেরা, পাকস্থলী এবং অগ্নাশয় জাতীয় অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বরাত তাদের দিয়েছিল। এদিকে এই ঘটনা সামনে আসার পর বর্ধমান মেডিকেল কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেছে। অ্যানাটমি বিভাগ ও তার আশপাশ এলাকা সিসি ক্যামেরায় মুড়িয়ে ফেলা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। সব বিভাগের ওপর নজরদারি আরও বাড়ানোর বিষয়েও তৎপরতা শুরু হয়েছে।