জলপাইগুড়ি: মনে অদম্য ইচ্ছাশক্তি থাকলে কি’ই না করা যায়! হ্যাঁ, জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শামা পারভিনের জীবনের গল্প শুনলে এমনটাই মনে হবে। খুবই সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা মেয়ে তিনি। শামার মা কোনওদিন স্কুলের চৌকাঠেই পা রাখেননি। এমন পরিবার থেকে উঠে এসে বর্তমানে তিনি আইএএস অফিসার। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পদে কর্মরত রয়েছেন। সাধারণ তাঁর জীবনযাপন। এলাকায় কখনও ঝাঁটা হাতে রাস্তা সাফাইয়ে নেমে পড়ছেন তিনি, তো কখনও ডেঙ্গি রুখতে আধিকারিকদের নিয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন শহরের তস্য গলিতে। এতটা সহজভাবে সাধারণের মাঝে চলে যেতে পারেন বলেই হয়তো শামা শহরের মানুষের কাছে চেনা মুখ।
বুধবার ভাবী আইএএস, আইপিএসদের জন্য একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জেলাশাসক ভাগ করে নিলেন নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা। শামা জানান, তাঁর মা কোনওদিন স্কুলের চৌকাঠে পা রাখেননি। তিনি নিজে সংসারের হাল ধরতে উচ্চমাধ্যমিকের পর কলেজের পড়াশোনা থামিয়ে রেলের সামান্য চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু সংসারের হাল ধরেও নিজের স্বপ্নকে নষ্ট হতে দেননি তিনি। তাই পরিবারের পরিস্থিতি কিছুটা সামলে যেতেই ফের পড়াশোনা শুরু করেন শামা। চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনাও এগিয়ে নিয়ে যান। স্নাতক হওয়ার পর ইউপিএসসি পরীক্ষা দেন। প্রথম সুযোগে সফল না হলেও, মনে অদম্য ইচ্ছাশক্তি ছিল তাঁর। সেই ইচ্ছাশক্তির ওপর ভর করে পরপর কয়েকবার পরীক্ষা দেন তিনি। এরপরই আসে সাফল্য।
প্রসঙ্গত, জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিভিন্ন কলেজ থেকে পড়ুয়ারা অংশগ্রহণ করে। আইএএস, আইপিএস হওয়ার পর তাঁরাও ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসতে চান। তাই জেলা প্রশাসনের তরফে তাঁদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ইনস্টিটিউটের জলপাইগুড়ি শাখার মাধ্যমে দেওয়া হবে এই প্রশিক্ষণ। জেলাশাসক জানিয়েছেন, গত বছর থেকে সরকারি পরীক্ষায় বসার প্রশিক্ষণ দিতে পড়ুয়াদের জন্য এই কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। এবছরও বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।