গয়েরকাটা: ব্রিটিশ শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে উত্তরবঙ্গের যে সংগ্রামীরা এগিয়ে এসেছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম জলপাইগুড়ির বানারহাট ব্লকের নাথুয়াহাটের শৈলেন্দ্রকৃষ্ণ নাগ। মূলত স্বদেশি অন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। ১৯৭৭ সালে মৃত্যু হয় তাঁর। স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে সরকারি সম্মানও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু উত্তরবঙ্গের স্বাধীনতা সংগ্রামী সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। নাথুয়াহাটে তাঁর স্মৃতিতে কোনও রাস্তাঘাটের নামকরণ, স্মৃতিফলক হয়নি। সেখানে নেই তাঁর কোনও মূর্তিও। বিষয়গুলি রূপায়ণের দাবি জানিয়েছেন তাঁর পরিবার থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা।
শৈলেন্দ্রবাবুর আদি বাড়ি ছিল আলিপুরদুয়ার। সেখানেই স্বাধীনতা সংগ্রামের লড়াইয়ে যুক্ত ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ষাটের দশকে নাথুয়াহাটে চলে আসেন তিনি। গান্ধিজি ও নেতাজির সভায় তিনি যোগ দিয়েছেন। ব্রিটিশ বিরোধিতায় জেলও খেটেছেন তিনি। দেশের জন্য তাঁর অবদানের পরবর্তীতে সরকার তাঁকে তাম্রপত্র দিয়ে সম্মানিত করে। এখন নাথুয়াহাটে তাঁর ছেলেরা রয়েছেন। বড় ছেলে স্বরাজ নাগ বলেন, ‘ছোটবেলায় দেখেছিলাম বাবা আমার এক দিদির হাত থেকে বেদিশি চুড়ি খুলে ফেলেছিলেন। বিদেশে তৈরি জিনিস একেবারেই পছন্দ ছিল না বাবার। পরিবারের প্রতি তেমন মনোযোগ ছিল না বাবার। সম্পূর্ণ নিয়োজিত ছিলেন দেশ মাতৃকার সেবায়।’ তবে স্বরাজবাবুর আক্ষেপ, তাঁর বাবার নামে নাথুয়াহাটে কোনও রাস্তাঘাটের নামকরণ বা আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হলে ভালো লাগত।
নাথুয়াহটের প্রবীণ নাগরিক প্রলয় দাস জানান, শৈলেন্দ্রবাবু স্বাধীনতা সংগ্রামী তো ছিলেনই, পাশাপাশি তিনি একজন সমাজসেবীও ছিলেন। প্রশাসনের কাছে তাঁরও দাবি, শৈলেন্দ্রবাবুর নামে কোনও রাস্তার নামকরণ বা মূর্তি স্থাপন করা হোক। এবিষয়ে শালবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শিল্পী মণ্ডল বলেন, ‘শৈলেন্দ্রবাবুর নামে কিছু করার চেষ্টা আমরা করেছিলাম তবে তা হয়ে ওঠেনি। নতুন বোর্ডের কাছে আমি এব্যাপারে পদক্ষেপ করার জন্য আবেদন জানাব।’