শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি শহরে দিনের পর দিন নেশাড়ুর সংখ্যা বাড়ছে(Drug addiction)। বহু নেশাড়ু মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্য রাস্তায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে এসে বিপাকে পড়ছেন বহু মানুষ। এই নেশাড়ুদের অশ্রাব্য গালিগালাজের শিকার হচ্ছেন অনেকে। ফলত, রাস্তাঘাটে বেরিয়ে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়ছেন বহু মহিলা সহ পথচারীরা। বিষয়টি নিয়ে সবাই অত্যন্ত বিরক্ত। কোথা থেকে এই মাদক আসছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শহরের বাসিন্দারা। বহু ক্ষেত্রেই অভিযোগের আঙুল উঠছে পুলিশের দিকে। পুলিশ অবশ্য ‘কড়া নজরদারি’র কথা বলে দায়িত্ব এড়াচ্ছে।
গত সোমবার শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তৃষা সরকার ও সোমা দত্ত এমন পরিস্থিতির মুখে পড়েন। দুজনেরই নজর ছিল কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মাঝবয়সি এক ব্যক্তির দিকে। নেশায় বুঁদ ওই ব্যক্তি আপন মনে বকবক করছিলেন। হঠাৎই তিনি রাস্তায় পড়ে যান। অনেকেই সাহায্য করতে এগিয়ে যান। তৃষাদের প্রশ্ন, শহরে মাদক কোথা থেকে আসছে? পুলিশ জানে না, এমনটা হতে পারে না। তাঁদের পরামর্শ, সরবরাহের চেন কেটে দিলে শহরে মাদকাসক্তের সংখ্যা কমবে। পরনে ভালো পোশাক কিন্তু নেশায় মত্ত হয়ে রাস্তাঘাটে অসুস্থ হওয়া বা অচৈতন্য হয়ে পড়ে থাকা মানুষের সংখ্যা দিন-দিন বাড়ছে। ট্রাফিক পুলিশকর্মীরা তাদের উদ্ধার করে সুস্থ করে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। কখনো-কখনো সাধারণ মানুষও একাজে হাত লাগান। কিছুদিন আগে হাসপাতাল মোড়ের কাছে এমনই এক নেশাড়ুর মাথায় জল ঢেলে, জল পান করিয়ে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছিলেন ট্রাফিক কর্মীরা। তারপর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার ভাইয়ের হাতে ওই যুবককে তুলে দেওয়া হয়। গত সপ্তাহে শিলিগুড়ি জংশনের কাছে নেশাগ্রস্ত এক যুবক পথচারীদের লক্ষ করে একটানা কুমন্তব্য করছিল। পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা দুই তরুণী প্রতিবাদ করেন। পরে জনতা এগিয়ে এসে তাকে ভাগিয়ে দেয়।
নেশার বিরুদ্ধে লড়াই করা অরিন্দম সান্যাল বলেন, ‘আগে মাসে দশটি এমন ঘটনা ঘটত। নেশাসক্তদের উদ্ধার করতাম। এখন সংখ্যাটা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে বহু শিক্ষিত যুবক-যুবতীও নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। এর কুপ্রভাব গোটা শহরে ছড়াচ্ছে।’ ভক্তিনগরের বাসিন্দা মৌসুমি পাল বলেন, ‘আমার ছোট ভাইও নেশার কবলে পড়ে নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিচ্ছে।’
এপ্রসঙ্গে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটান পুলিশের এডিসিপি সুভেন্দ্র কুমার বলেন, ‘শহরের যে সব জায়গায় এমন ঘটনা বেশি ঘটছে, আমরা সেদিকে কড়া নজর রাখছি।’ এই ব্যাধি থেকে শহর কবে মুক্তি পাবে সেদিকেই এখন সবার নজর।’