বর্ধমান: পারিবারিক বিবাদের জেরে ছুরি চালিয়ে দাদাকে খুনের অভিযোগ উঠল ভাইয়ের বিরুদ্ধে। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হলেন মা। পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের ঘটনা। মৃতের নাম শেখ মনিরুদ্দিন (২৭)। ঘটনায় অভিযুক্ত শেখ সামিম ওরফে আননকে গ্রেপ্তার করেছে ভাতার থানার পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শেখ মনিরুদ্দিনের বাড়ি রাধানগর গ্রামে। মনিরুদ্দিন একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। অভিযুক্ত শেখ সামিম সম্পর্কে মনিরুদ্দিনের খুড়তুতো ভাই। সে কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। পাশাপাশি বাড়িতে দুই পরিবার বসবাস করলেও নিত্যদিনই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে বিবাদ লেগে থাকত বলে অভিযোগ।
পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার মনিরুদ্দিনদের একটি ঘরের চাল ছাওয়ানোর কাজ চলছিল। সেই কারণে খড় ভেজানোর জন্য একটি পাইপে করে খড়ে জল দেওয়া হচ্ছিল। আর পাইপটি দুই বাড়ির মাঝের গলি দিয়ে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। শেখ মনিরুদ্দিন ও শেখ সামিমের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর গতকাল রাতে মনিরুদ্দিন বাড়ির বাইরে খামারে দাঁড়িয়ে ফোন করার সময় পেছন থেকে গিয়ে তাঁর গলায় ছুরি চালানোর অভিযোগ ওঠে শেখ সামিমের বিরুদ্ধে। মনিরুদ্দিন নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে দুই ভাইয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। সেইসময় চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান মনিরুদ্দিনের মা জুবেদা বিবি। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে তিনিও সামিমের হাতে আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। জুবেদা বিবির মাথা ফেটে যায়। তারই মধ্যে মনিরুদ্দিনের পেটে ছুরি দিয়ে একের পর এক কোপ বসাতে শুরু করে সামিম।
শেষে জুবেদা বিবি ও মনিরুদ্দিনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে শেখ সামিম সেখান থেকে পালিয়ে যায়। জখম মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে ভাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মনিরুদ্দিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে বর্ধমান মেডিকেলে স্থানান্তরিত করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শেখ সামিমকে এদিন গ্রেপ্তার করে। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।