মাথাভাঙ্গা: অষ্টমী স্নানের মেলা বলতে মাথাভাঙ্গা মহকুমা তো বটেই কোচবিহার জেলার বাসিন্দাদের মুখে যে মেলার নাম প্রথমেই আসে সেটি হল মাথাভাঙ্গা-১ ব্লকের পচাগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের মেলারডাঙ্গার কলকনাথের মেলা। এ বছর লোকসভা নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে অষ্টমী স্নান তিথি পড়ে যাওয়ায় মেলা আয়োজনের প্রশাসনিক অনুমতি মিলল না। ফলে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী কলকনাথের মেলা শেষ পর্যন্ত এ বছর আদৌ অনুষ্ঠিত হবে কি না তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
পচাগড় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কুন্তী বর্মন জানান, লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগেই মেলাটির টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। যে ঠিকাদারি সংস্থা বেশি দর দিয়েছে তাকে মেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাপাই দাস নামে এক ব্যক্তি ৩ লক্ষ ৩ হাজার টাকায় মেলার বরাত পেয়েছিলেন। তবে মেলা আয়োজনে প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় ওই ব্যক্তিকে তাঁর টেন্ডারের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন অনুমতি না দেওয়ায় গ্রাম পঞ্চায়েত মেলা আয়োজনের ঝুঁকি নিচ্ছে না।
এদিকে সরকারিভাবে মেলার অনুমতি না মিললেও এলাকার বাসিন্দাদের ধারণা আগামী ১৬ এপ্রিল মঙ্গলবার মেলারডাঙ্গায় মহামায়া মন্দিরে যেমন অন্নপূর্ণাপুজো অনুষ্ঠিত হবে। সেই সঙ্গে মন্দির চত্বরে দোকানপাটও বসবে। মেলারডাঙ্গা মহামায়া মন্দিরে অন্নপূর্ণাপুজো ও মেলার সূচনা করেছিলেন পণ্ডিত কলকরঞ্জন বর্মন। তাঁর নামানুসারেই পরবর্তীকালে কলকনাথের মেলা নামকরণ করা হয়েছে। ১৯৮৪ সাল থেকে পঞ্চায়েত সমিতির মেলা পরিচালনার দায়িত্ব পেলেও পরবর্তীকালে পচাগড় গ্রাম পঞ্চায়েত মেলা পরিচালনার দায়িত্ব পায়। তবে মন্দির এবং অন্নপূর্ণাপুজোর দায়িত্ব থেকে যায় কলকরঞ্জন বর্মনের উত্তরসূরিদের হাতেই। বুধবার মেলারডাঙ্গা মহামায়া মন্দির প্রাঙ্গণে প্রয়াত কলকরঞ্জন বর্মনের উত্তরসূরি সুশান্ত বর্মন এবং সঞ্জয়কুমার বর্মন জানান, শুনেছি নির্বাচনের কারণে মেলা আয়োজনের অনুমতি প্রশাসন দেয়নি। তবে মন্দিরে পুজো যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে তার প্রস্তুতি চলছে।
মাথাভাঙ্গা থানার আইসি হেমন্ত শর্মা বলেন, নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী নির্বাচন শুরুর পূর্বে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোনও মেলা বা জমায়েতের অনুমতি দেওয়া যাবে না। তাই অনুমতি দেওয়া হয়নি।