মাদারিহাট: চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি জলদাপাড়া পূর্ব রেঞ্জের কাছে জাতীয় উদ্যানে প্রবেশের গেট তৈরির জন্য শিলান্যাস হয়েছিল। বরাদ্দ করা হয়েছিল ৪ লাখ ৯৯ হাজার ২১২ টাকা। ফিতে কেটে শিলান্যাস করেছিলেন এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী। ব্যাস, জাঁকজমক করে শিলান্যাসই সার! চার মাসে এক কোদাল মাটিও কাটা হয়নি বলে অভিযোগ। কেন শুরু হল না কাজ? বিজেপির কথায়, টাকা আত্মসাৎ করায় কাজ হয়নি। স্থানীয় প্রধানের দাবি, বন দপ্তর সহযোগিতা করেনি বলে এই অবস্থা। যদিও বন দপ্তরের তরফে কোনও বক্তব্য মেলেনি। অন্যদিকে, এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান আবার দায় চাপালেন কেন্দ্রের বনমন্ত্রকের ওপর।
বিজেপির ১২/১ পার্টের পঞ্চায়েত সদস্য সুশীলা উপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘আমাদের তো মনে হয়, কাজ না করেই পুরো টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। সেজন্যই তো গেটের কাজের জন্য ব্যয়বরাদ্দের বোর্ডটা খুলে টিকিট বুকিংয়ের কাউন্টারের ভেতর ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে।’
শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শ্রীবাস রায় যদিও কাজ শুরু না হওয়ার জন্য বন দপ্তরের অসহযোগিতার কথা তুলে ধরেছেন। তাঁর কথায়, ‘জলদাপাড়ার তৎকালীন বনাধিকারিক এসজেডিএ’র কাছে বলেছিলেন, গেট তৈরির বরাদ্দ করা টাকা বন দপ্তরের হাতে তুলে দিতে হবে। বন দপ্তর থেকে গেটটি তৈরি করা হবে। কিন্তু এসজেডিএ’র তরফে জানানো হয়, বন দপ্তরের হাতে টাকা তুলে দেওয়ার কোনও নিয়ম নেই। টেন্ডার তারা বের করেছে, কাজ বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার করবে।’ তিনি জানান, তারপরই বন দপ্তর থেকে কাজ করার কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। তিনি যদিও অনেকবার আবেদন-নিবেদন করেছিলেন। এ বিষয়ে জলদাপাড়ার বর্তমান বনাধিকারিক পারভিন কাশোয়ান, উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভিকে একাধিকবার ফোন করা হলেও কেউ ফোন তোলেননি।
এদিকে, এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী জানালেন, কেন্দ্র সরকারের বন বিভাগ থেকে বাধা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এই গেটটি তৈরি হলে বন্যপ্রাণীরা যাতায়াতে বাধা পাবে। জলদাপাড়া পূর্ব রেঞ্জ থেকে এক কিলোমিটার দূরে গেট তৈরি করতে হবে বলে নির্দেশ মিলেছে। তিনি বলেন, ‘মাদারিহাট দিয়ে জলদাপাড়া প্রবেশের গেট তো জাতীয় উদ্যান লাগোয়া। সেখানে যদি অসুবিধা না হয়, তাহলে শালকুমারে কী অসুবিধা? আসলে বিজেপি চায় না, ভালো কিছু হোক। আমরা রাজ্য বন দপ্তরের এনওসি নিয়েই টেন্ডার বের করেছিলাম।’