পলাশবাড়ি: উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার লিংক রোডের গিরিয়া সেতু নিয়ে সই সংগ্রহ অভিযানে নামে একদল পড়ুয়া। এলাকার পরীক্ষার্থীদের এমন আন্দোলন দেখে এখন তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক তর্জা শুরু হয়েছে। শনিবার একে অপরের উপর দায় চাপান দুই ফুলের নেতারা। পূর্ব কাঁঠালবাড়ি ফালাকাটা বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন। এবার এই গ্রাম পঞ্চায়েত দখলও করেছে বিজেপি। তাই পদ্মের সাংসদ, বিধায়ক, প্রধানরা কেন এই সেতু নিয়ে নীরব, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে তৃণমূল। আবার তিন দশকের এই সেতু না হওয়ার পেছনে তৃণমূলকেই দায়ী করেছে বিজেপি। এদিকে লোকসভা ভোট আসছে বলে সেতুর দাবিতে রাস্তায় নামতে প্রস্তুত হচ্ছেন এলাকাবাসীও।
তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার-১ ব্লক সভাপতি তুষারকান্তি রায়ের কথায়, ‘বিজেপির সাংসদ, বিধায়করা পরিদর্শন করে ওই সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এখন তো পঞ্চায়েতও বিজেপির দখলে। কিন্তু এ নিয়ে বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা ব্যর্থ।’ তাঁর দাবি, বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদ উদ্যোগী হয়েছে। গিরিয়া সেতুর কাজটি করা হবে বলে তৃণমূল পরিচালিত আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে’ও আশ্বাস দিয়েছেন।
বিজেপি অবশ্য তৃণমূলের যুক্তি মানতে নারাজ। ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মনের বক্তব্য, ‘২০২২ সালে এই সেতুর বিষয়টি আমি বিধানসভার অধিবেশনেও তুলেছিলাম। আমাদের সাংসদ, বিধায়কদের কোনও কাজ করতে দেয় না প্রশাসন।’ তিনি জানান, ২০১৯ সালের লোকসভা কিংবা ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তো তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক ছিলেন। আবার জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে। আর গিরিয়া সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল। এসব যুক্তি দেখিয়ে বিধায়কের মন্তব্য, ‘গিরিয়া সেতুর কাজ করাতে শাসকদল ও স্থানীয় প্রশাসনই ব্যর্থ।’
আর বিজেপি পরিচালিত পূর্ব কাঁঠালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুপর্ণা বর্মনের কথায়, ‘জেলা পরিষদের রাস্তায় গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমিত ফান্ডের টাকায় ওই সেতু করা সম্ভব নয়।’
এসব তর্জায় অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ স্থানীয়রা। স্থানীয় তরুণ মহানন্দ বিশ্বাসের কথায়, ‘ভোটের আগে নেতা, জনপ্রতিনিধিদের এরকম প্রতিশ্রুতি বহুবার শোনা গিয়েছে। কিন্তু সেতুর কাজ এখনও হয়নি। তাই এলাকায় নেতারা এবার ভোট চাইতে এলেই সেতু নিয়ে জবাবদিহি করতে হবে।’ একই কথা বলেছেন আরেক তরুণ অরূপ দাস।
পুঁটিমারি মোড় থেকে দক্ষিণে কোচবিহার জেলায় যাওয়ার রাস্তায় গিরিয়া সেতুর বেহাল দশা নিয়ে শুক্রবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা সেতুর মুখে দাঁড়িয়ে পথচলতি মানুষের সই সংগ্রহ করেছে। এবার তারাও সেতুর দাবি জানাবে প্রশাসনকে।