দিনহাটা: দিনহাটা শহরের অদূরে বড়নাচিনা ঘাটপাড় লাগোয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ড বর্জ্যে উপচে পড়ছে। ওই এলাকায় বাড়ছে দূষণ। বাসিন্দারা ঘটনায় তিতিবিরক্ত। এই পরিস্থিতিতে শহরের নিগমনগর লাগোয়া সলিড ওয়েস্ট প্রসেসিং ইউনিটটি এখনও চালু করা যায়নি। ফলে, গৃহস্থালির বর্জ্য নিষ্কাশন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে দিনহাটা পুর প্রশাসন। মুখে না বললেও তাদের শরীরী ভাষায় তা স্পষ্ট। গৃহস্থালির সংগৃহীত বর্জ্য নিয়ে রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছেন পুরকর্তারা। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, প্রায়ই শহরের ফাঁকা স্থানে প্রচুর বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। গত কয়েক মাস থেকে দেখা যাচ্ছে, দিনহাটার হরীতকীতলার মাঠের একাংশে ও দিনহাটা থানা মাঠ লাগোয়া এলাকায় বর্জ্য জমিয়ে রাখা হচ্ছে। বাসিন্দাদের একাংশের আশঙ্কা, নোংরা ফেলার স্থানাভাবে যত্রতত্র বর্জ্য জমিয়ে রাখা হচ্ছে। পুরসভার দাবি, নিগমনগরে এখন জোরকদমে সলিড ওয়েস্ট প্রসেসিং ইউনিটের কাজ চলছে। এটি চালু হলে সমস্যার দ্রুত সমাধান মিলবে।
দিনহাটা পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডে মোট ১২ হাজারের কাছাকাছি ঘর রয়েছে। পুরসভা দৈনিক ১১-১২ টন বর্জ্য সংগ্রহ করে। গত তিন দশক ধরে এই সংগৃহীত বর্জ্যের বেশিরভাগই ফেলা হচ্ছিল দিনহাটা বড়নাচিনা ঘাটপাড়ের ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। বর্তমানে ডাম্পিং গ্রাউন্ড ভরে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই ওই ডাম্পিং গ্রাউন্ডে আর বেশিদিন বর্জ্য ফেলা যাবে না বলেই পুরসভা সূত্রে খবর। প্রশ্ন উঠছে, পুর এলাকার গৃহস্থালির বর্জ্য তাহলে কোথায় ফেলা হবে? ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবিউনালের নির্দেশ মেনে রাজ্যের সবক’টি পুরসভাতেই বিজ্ঞানসম্মতভাবে পচনশীল ও অপচনশীল গৃহস্থালির আবর্জনা সংগ্রহ প্রক্রিয়া চালুর কথা বলা হয়েছে। দিনহাটা পুরসভাও ২০২০ সালের শুরুর দিকে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে পৃথকভাবে এমন বর্জ্য সংগ্রহ শুরু করে। তা থেকে পরীক্ষামূলকভাবে জৈব সার তৈরিও শুরু হয়। কিন্তু স্থায়ী প্ল্যান্ট না থাকায় এত বিপুল পরিমাণ পচনশীল বর্জ্য থেকে সার তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই, পুর কর্তৃপক্ষ বাড়তি অংশ দিনহাটা বড়নাচিনার ডাম্পিং গ্রাউন্ডে ফেলে দিত। কিন্তু সেটি ভরে যাওয়ায় পুর প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
শহরের বাসিন্দা ভাস্কর দেব বলেন, ‘বর্তমানে বর্জ্য একটি বড় সমস্যা। দিনহাটা শহরেও এই সমস্যা রয়েছে। পুর প্রশাসনকে এবিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।’ দিনহাটা পুরসভার সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের নোডাল অফিসার অসিত বল জানান, বড়নাচিনা ডাম্পিং গ্রাউন্ড প্রায় ভরে গিয়েছে। ইতিমধ্যে সুডার থেকে সমীক্ষা করে গিয়েছে। নিগমনগর সলিড ওয়েস্ট প্রসেসিং ইউনিটের কাজ চলছে জোরকদমে। সেটি চালু হলে সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়ে যাবে। দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান গৌরীশংকর মাহেশ্বরী অবশ্য জানিয়েছেন, ডাম্পিং গ্রাউন্ড পুরোপুরি ভর্তি হয়নি। এখনও সেখানে বর্জ্য ফেলা যাচ্ছে। তবে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। নিগমনগরে সলিড ওয়েস্ট প্রসেসিং ইউনিট চালু হয়ে গেলে সমস্যার পুরো সমাধান হয়ে যাবে।