ঘোকসাডাঙ্গা: অবশেষে চারদিন পর জঙ্গল থেকে আসা দাঁতালটিকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হল বন দপ্তর। শুক্রবার মাথাভাঙ্গা ২ ব্লকের নিশিগঞ্জ,পারডুবি, উনিশবিশার লোকালয়ে ঢুকে পড়ে ছয়টি হাতি। হাতির হানায় মৃত্যু হয় পারডুবির আনন্দ প্রামাণিক(৬১), বুধেশ্বর অধিকারী(৬৫), উনিশবিশার রেখারানী বর্মন(৬৮), জয়ন্তী সরকারের(৪৮)। পাশাপাশি উনিশবিশায় হাতির হানায় মৃত্যু হয় দুটি গোরুর। ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় ফসল, ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়। একটি দাঁতাল উনিশবিশার বণিকপাড়া হয়ে ঘোকসাডাঙ্গা রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে চলে আসে। ঘুরে ফের উনিশবিশায় ঢুকে পড়ে। তারই মাঝে চারটি হাতির একটি দল সুতারপাড়া হয়ে পুণ্ডিবাড়ি ফালাকাটা জাতীয় সড়ক পার করে তোর্ষা সেতু সংলগ্ন এলাকা দিয়ে পাতলাখাওয়ার জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হয় বনকর্মীরা। বন দপ্তরের দাবি, রাতেই এই চারটি হাতি জঙ্গলে প্রবেশ করেছে। এদিকে পারডুবিতে থাকা হাতিটি সন্ধ্যায় মানসাই নদী অতিক্রম করে মাথাভাঙ্গার দিকে চলে যায়। আবার রাতে ফিরে এসে রাঙামাটি কোচবিহার চা বাগান হয়ে ফালাকাটার পাশ দিয়ে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হয় বলে বন দপ্তরের দাবি। উনিশবিশায় চলে আসা হাতিটি উনিশবিশা হয়ে রুইডাঙ্গায় প্রবেশ করে। বন দপ্তরের তরফে ঘুমপাড়ানি গুলি করে রাতে রুইডাঙ্গার দোলং নদী সংলগ্ন এলাকায় আর্থমুভারের সাহায্যে দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করে বন কর্মীরা। কিন্ত রাতেই দড়ি ছিঁড়ে আর্থমুভারের কাচ, লাইট ভেঙে ফের চলে আসে ধানখেতে। রাতভর ধানক্ষেতেই নজরে রাখে বনকর্মী ও পুলিশ কর্মীরা।
শনিবার সকালে জলদাপাড়া থেকে দুটি কুনকি এনে পাটাকামারিতে ফের শুরু হয় হাতি ধরার প্রক্রিয়া। রীতিমতো ঘুমপাড়ানি গুলি করে দুটি কুনকি ও হাইডারের সাহায্যে বেঁধে ট্রাকে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করে বন কর্মীরা। প্রায় ৩ ঘণ্টা চেষ্টার পর দাঁতালটিকে ধরে ট্রাকে করে জলদাপাড়ার জঙ্গলে নিয়ে যায় বন দপ্তরের আধিকারিক সহ কর্মীরা।
প্রশ্ন উঠছে, তিনদিনে হাতির গতিবিধি নিয়ে কেন সজাগ হয়নি বন দপ্তর? কেন কোনও আগাম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি বন দপ্তর? আর তার জেরেই চারজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বন দপ্তরের নজরদারি ও হাতি তাড়ানোর ব্যবস্থায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কোচবিহারের এডিএফও বিজন কুমার নাথ জানান, লোকালয়ে চলে আসা ৫টি হাতিকে শুক্রবার রাতেই জঙ্গলে ফেরানো সম্ভব হয়েছে। বাকি একটি হাতিকে এদিন সকালে উদ্ধার করে জলদাপাড়ার জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে। হাতির হানায় মৃত ব্যক্তিদের ও ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি নিয়ম মেনে আর্থিক সাহায্য করা হবে।