অর্ঘ্য বিশ্বাস, ময়নাগুড়ি: প্রচণ্ড গরমে নাজেহাল মানুষের পাশাপাশি জীবজগৎ। জলের খোঁজে নদীর ধারে বিচরণ করছে হাতির দল। কয়েকদিন ধরে গরুমারা জঙ্গল ঘেঁষা রামশাই এলাকার জলঢাকা নদীর ধারে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাতির পাল। প্রতিদিনই ওই দলটি অপর প্রান্তের নাথুয়া রেঞ্জের বনাঞ্চল থেকে জলের খোঁজে বেরিয়ে আসছে নদীর ধারে। দীর্ঘ সময় নদীর ধারে আপন খেয়ালে সময় কাটিয়ে ফের ঢুকে পড়ছে বনাঞ্চলে। যদিও এখনও পর্যন্ত হাতির দলটি জলঢাকা নদী পেরিয়ে গ্রামের দিকে ঢোকেনি। বন দপ্তরের তরফে অবশ্য নজরদারি চালানো হচ্ছে।‘
এলাকাবাসীর কথায়, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে হাতির দল জলঢাকা নদীর মাঝে বিচরণ করছে। কোনওদিন দুপুর কিংবা কোনওদিন বিকেলের দিকে হাতির দলটি নেমে পড়ছে নদীতে। সেখানে বিকেল পর্যন্ত নদীতে গা ভাসিয়ে চলছে স্নান। কখনও একটি হাতি আবার কখনও দলবেঁধে নদীর মাঝে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। দলটিতে বেশ কয়েকটি শাবকও রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ স্থানীয় বাসিন্দা মানিক সরকার বলেন, ‘গরমে নাজেহাল হয়ে জলের খোঁজেই হাতিগুলো নদীর ধারে বেরিয়ে আসছে। তবে শান্ত স্বভাবেই রয়েছে হাতিগুলো।’ স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, কখনও নদীর ধারে বসে ধুলো উড়িয়ে আবার কখনও জলের মধ্যে শুয়ে খেলার আমেজে থাকছে হাতিগুলি। প্রায়দিনই পর্যটক সহ মানুষজন হাতির দেখা পেয়ে বেজায় খুশি।
শুক্রবার বিকেল নাগাদ জলঢাকা নদীর পাড়ে দীর্ঘ সময় ধরে একটি হাতিকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। যদিও কিছুক্ষণ থাকার পর নদীর চর থেকে জঙ্গলে ঢুকে পড়ে হাতিটি।
পরিবেশপ্রেমী অনির্বাণ মজুমদার বলেন, ‘হাতির সারাদিনে প্রচুর জলের প্রয়োজন হয়। তার সঙ্গে এই কয়েকদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য মানুষের পাশাপাশি বন্যপ্রাণীরাও নাজেহাল। তাই জলের কাছাকাছি থাকতেই পছন্দ করে তারা।’
বন দপ্তর জানিয়েছে, হাতি নদীর কাছাকাছি থাকতেই পছন্দ করে। চলতি মরশুমে দেরিতে বৃষ্টি হয়েছে। তবে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কিছু জলাধার রয়েছে যাতে বন্যপ্রাণীর কোনও সমস্যা না হয়। রামশাই মোবাইল স্কোয়াডের রেঞ্জ অফিসার প্রদ্যুৎ দে সরকার বলেন, ‘হাতির গতিবিধির দিকে নজরদারি চলছে, নদী পেরিয়ে গ্রামাঞ্চলে যাতে হাতি না চলে আসে সেদিকে নজরদারি চলছে।’