কালিয়াগঞ্জ: বাড়ির দোড়গোড়ায় এসেও ফিরে যেতে হলো মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারকে। নিজের বাড়িতে ঢোকার সাহস পেলো না মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবার। শুক্রবার বিকালে ন্যাশানাল কমিশন ফর শিডিউল কাস্টের ভাইস চেয়ারপার্সন অরুণ হালদারের সাথে মালদার এক গোপন আস্তানা থেকে গাড়িতে করে রাধিকাপুরের চাঁদগাঁও এলাকায় পরিবারের সকলকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা রবীন্দ্রনাথ বর্মন। ইচ্ছে ছিল দাঁতেদাঁত চিপে ছোট ছেলের শ্রাদ্ধশান্তি এই বাড়িতেই করবেন। কিন্তু, স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের উপর ভরসা করতে না পেরে বাড়ি সামনে থেকেই গাড়ি ঘুরিয়ে ফের গোপন আস্তানায় ফিরে গেল মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবার। অরুণ হালদারের অভিযোগ, ‘ জেলার এসপি’র বদলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রয়েছেন। তিনি আসতে পারতেন। কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি আমার সামনা সামনি হতে ভয় পাচ্ছেন। কোনও কথার জবাব দিতে পারছেন না। এর থেকে লজ্জাজনক আর কোন ঘটনা হতে পারেনা। আজ পরিষ্কার হয়ে গেল, পুলিশ কি চাইছে। প্রশাসন কি চাইছে। উল্লেখ্য ২৬ এপ্রিল রাতে রাধিকাপুরের চাঁদগাঁওয়ের বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাসকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ ওঠে কালিয়াগঞ্জ থানার এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে। ঘটনার সিআইডি তদন্ত চলছে।
এদিকে, মৃত্যুঞ্জয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে নানা ধরনের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে বলে সরাসরি তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন মৃত্যুঞ্জয়ের বাবা রবীন্দ্রনাথ বর্মন। তাঁর অভিযোগ, পুলিশের ভয়ে লুকিয়ে ছিলাম আমরা। চার লক্ষ টাকা করে দুই কিস্তিতে মোট আট লক্ষ টাকায় কেস দফারফা করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে বৌমার চাকরি, বাচ্চাটার সুরক্ষার দায়িত্ব নিতে চাইছে। কিন্তু, ছেলের মৃত্যুর সুবিচারের কথা কেউ একবারেও মুখ দিয়ে বলছে না। আমরা আতঙ্কে আছি। পুলিশ রাতে বাড়িতে এসে বিভিন্ন কাগজে সই করে নিতে পারে। আমি সিবিআই তদন্ত চাই।’ এদিকে গাড়িতে বসে মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রী গৌরি বর্মন জানান, পুলিশ আবার কখন আসে, কখন উঠিয়ে নিয়ে যায়, সেই ভয়ে আমরা বাড়ি ছাড়া রয়েছি।’ জাতীয় তপশিলি কমিশনের ভাইস চেয়ারপার্সন অরুণ হালদারের বক্তব্য, ‘বাংলায় তপশিলিদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। তামিলনাড়ুতে অন্য দলের সরকার চলছে। তারা তো কখনই এমন করে না। আমি প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নোটিশ পাঠাবো। না এলে সমন পাঠাবো। যদি তাতেও না আসে তাহলে অ্যারেস্ট করাবো। বাংলার রাজ্যপাল ও ভারতের রাষ্ট্রপতিকে বিষয়টি জানাবো। দরকার পড়লে আমরা কমিশনের পক্ষ থেকে সিবিআইকে কেস রেফার করে দেবো। মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারকে এমতাবস্থায় ছেড়ে চলে গেলে রাতের বেলায় পুলিশ প্রশাসন এসে ওদের জোর করে সই করিয়ে নিয়ে যেতে পারে। তাই ওদের সাথে নিয়ে গোপন আস্তানায় পৌঁছে দেবো।’