শিলিগুড়ি: ভোটের দিনও ভুয়ো খবর ছড়িয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার অপচেষ্টা চলল শিলিগুড়িতে। এক্ষেত্রেও জনপ্রিয়তাকে হাতিয়ার করে উত্তরবঙ্গ সংবাদকে ব্যবহার করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ সংবাদের খবর বিকৃত করে তা লিফলেট আকারে ছাপিয়ে খবরের কাগজের সঙ্গে বাড়ি বাড়ি বিলি করা হয়েছে। সংবাদপত্র কর্তৃপক্ষর তরফে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানোর পরও বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের এমন কর্মকাণ্ডে ছিছি রব উঠেছে।
শুক্রবার জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনে ভোট ছিল। শিলিগুড়ির পুরনিগমের ১৪টি ওয়ার্ড ওই লোকসভা কেন্দ্রের অধীনে। এছাড়াও রয়েছে শহর সংলগ্ন ডাবগ্রাম-২ গ্রাম পঞ্চায়েত। মূলত ওই এলাকাগুলিতেই এদিন লিফলেট বিলি হয়েছে বলে খবর। সেখানে উত্তরবঙ্গ সংবাদের একটি পৃষ্ঠাকে বিকৃত করে জলপাইগুড়ি লোকসভার ভোটপরবর্তী জনমত সমীক্ষা বলে তৃণমূল এবং বিজেপির পক্ষে একটি শতাংশের হিসাব দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের কোনও সমীক্ষা উত্তরবঙ্গ সংবাদ করেনি। অথচ কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উত্তরবঙ্গের আত্মার আত্মীয় উত্তরবঙ্গ সংবাদের জনপ্রিয়তাকে ব্যবহার করে এভাবে সংবাদপত্র বিকৃত করে ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে। আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ির পর এবার একই কাণ্ড ঘটেছে শিলিগুড়িতে।
ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক বিজেপির শিখা চট্টোপাধ্যায় সরাসরি এটাকে তৃণমূলের কাজ বলে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলছেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস এভাবে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে, যদি কিছু মানুষ এসব দেখে ওদের ভোট দেয়। কিন্তু মানুষ নরেন্দ্র মোদিকে দেখেই ভোট দিয়েছেন এবং আগামী দিনগুলিতেও দেবেন।’
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকারের বক্তব্য, ‘এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ধরনের দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রেস কাউন্সিলেরও উচিত বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো।’
তাঁর দলের বিরুদ্ধে বিরোধীরা অভিযোগ তুললেও নিরুত্তর তৃণমূলের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ব্লক সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক। তিনি ঘটনার নিন্দা করেই বলছেন, ‘এভাবে সংবাদপত্র বিকৃত করে তা ছড়ানো অন্যায়। কে বা কারা এটা করেছে তা নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। আমরা মনে করি, গত পাঁচ বছরে এখানকার সাংসদ কী কাজ করেছেন আর মুখ্যমন্ত্রী এখানকার উন্নয়নে কী করেছেন তার নিরিখেই মানুষ ভোট দেবেন।’
সচেতন পাঠকরা অবশ্য একটু যাচাই করেই ওই অপকর্ম ধরে ফেলছেন। কারণ বিকৃত অংশে যে ধরনের ফন্ট বা লেখার ধরন ব্যবহার করা হয়েছে তা উত্তরবঙ্গ সংবাদ কখনোই ব্যবহার করে না। তাই এই ধরনের প্রতারণাচক্র থেকে পাঠকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে উত্তরবঙ্গ সংবাদ কর্তৃপক্ষ।