উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বসন্তকালের মনোরম স্নিগ্ধ হাওয়া আমাদের মনকে সতেজ করে তোলে ঠিকই, কিন্তু বসন্তের এই হাওয়াতেই উড়ে বেড়ায় নানান রোগের জীবাণু। এই সময় ঘরে ঘরে চিকেন পক্সের মতো রোগের সংক্রমণ বাড়ে। বাচ্চা থেকে বয়স্ক সবারই হতে পারে এই মারাত্মক চিকেন পক্স। ভেরিসেলা-জোস্টার ভাইরাস থেকে এই চিকেন পক্স হয়।
চিকেন পস্কের উপসর্গ হিসেবে প্রথমে জ্বর, শরীর ম্যাজ ম্যাজ, পেটের গন্ডগোল দেখা দেয়। এরপরই ফোস্কার মতোন সারা শরীর জুড়ে ফুসকুড়ি দেখা দেয়। চিকেন পক্স পুরোপুরিভাবে সাড়তে সময় নেয় প্রায় ১০ দিন। তারপর ডাক্তারের নিয়মানুসারে আরও ২১ দিন বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়া দরকার। অল্পবয়সে হওয়ার চেয়ে চিকেন পক্স যদি বয়সকালে হয় তবে ভোগান্তি আরও বেশি হয়। ফোস্কাগুলি সাড়তে এমনিই অনেক সময় নেয় তারপর সেই দাগ যেতে আরও সময় লাগে।
আমরা হয়তো অনেকের কাছেই শুনেছি যে চিকেন পক্স একবার হয়ে গেলে দ্বিতীয়বার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না কিন্তু এই ধারণা একদমই ভুল। কোনও কারণে ভাইরাস যদি শরীরে থেকে যায় তাহলে একাধিকবার চিকেন পক্স হতে পারে। তবে এরম হওয়ার সম্ভাবনা মাত্র ২ শতাংশ। এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সাবধানতা অবলম্বন করা অবশ্যই জরুরি। তাই জেনে নেওয়া প্রয়োজন কীভাবে এই ভাইরাস ছড়ায় এবং এর থেকে দূরে থাকবার জন্য কী কী সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার।
কীভাবে ছড়াতে পারে এই ভাইরাস?
১) সংক্রামক রোগীর ব্যবহার করা জিনিস ব্যবহার করলে।
২) রোগীর পক্সের ফোস্কার সংস্পর্শে আসলে।
৩) সংক্রামক রোগীর হাঁচি বা কাশির থেকে।
৪) গর্ভবতী মায়ের থেকে শিশুর চিকেন পক্স হতে পারে।
কী কী সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন?
সংক্রামিত ব্যক্তির থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন:
চিকেনপক্সের ভাইরাস অত্যন্ত সংক্রামক। সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে বা তাঁর হাঁচি ও কাশির সময়ে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই সংক্রমণ রোধ করার জন্য সংক্রামিত ব্যক্তির থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। পরিবারে কারও চিকেনপক্স হলে সতর্কতা অবলম্বন করা অবশ্যই দরকার। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল বা গর্ভবতী মহিলাদের এই ভাইরাসের থেকে বাঁচতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন:
যেকোনও ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে হলেই সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাইরে থেকে এসে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে জন্য হ্যান্ডওয়াশ এবং জল দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখতে হবে এবং কিছুক্ষণ পর পরই স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলুন:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাল হলে এই ভাইরাসে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। তাই প্রতিদিন পাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য রাখুন। নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুমও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।