আসানসোল: কয়লা পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার সিআইএসএফের ইনস্পেক্টর আনন্দমোহন সিং। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে ইসিএলের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা ডিরেক্টর অপারেশন সুনীল কুমার ঝাঁকে। সিবিআই এদিন দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কলকাতার নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠায়। জানা গিয়েছে, তদন্তে সহযোগিতা না করায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার তাঁদের আসানসোল সিবিআই বিশেষ আদালতে তোলা হবে। সিবিআইয়ের তরফে তাঁদের হেপাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে সুনীল কুমার ঝাঁ সিংরোলি মাইনসে জেনারেল ম্যানেজার থেকে প্রমোশন পেয়ে ইসিএলে আসেন ডিরেক্টর অপারেশন পদে। সরজিৎ চক্রবর্তী ইসিএলের চেয়ারম্যান কাম ম্যানেজিং ডিরেক্টর বা সিএমডির পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর কিছুদিন তিনি সেই দায়িত্বে ছিলেন। অন্যদিকে, সিআইএসএফের ইনস্পেক্টর আনন্দ কুমার সিং ইসিএলের শীতলপুর সদর দপ্তরে পোস্টিং থাকলেও বিভিন্ন এরিয়ার সঙ্গে তাঁর সরাসরি যোগাযোগ ছিল। এখান থেকেই তাঁকে ফরাক্কায় বদলি করা হয়েছিল। অভিযোগ, তাঁরা দুজনেই লালা ওরফে অনুপ মাঝির কাছ থেকে প্রচুর টাকা নিতেন কয়লা পাচারের জন্য। শুধু আনন্দমোহন সিংই নয়, মনে করা হচ্ছে সিবিআই তাঁকে নিজেদের হেপাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর আরও বেশ কয়েকজন সিআইএসএফের আধিকারিকের নামও বেরিয়ে আসবে।
এর আগে এই মামলায় ইসিএলের বর্তমান ও প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার সহ ৮ জনকে যখন গ্রেপ্তার করে বারবার আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হত, তখন তাঁদের আইনজীবীরা প্রশ্ন তুলতেন, ইসিএলের কয়লা চুরি আটকানোর দায়িত্ব সিআইএসএফের। তাহলে তাঁদের কাউকে কেন ধরা হচ্ছে না? এবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার জালে ধরা পড়লেন সিআইএসএফের ইনস্পেক্টর।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সিবিআই কয়লা পাচার মামলায় এফআইআর করে। সেই মামলায় রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা খনি উত্তোলনকারী সংস্থা বা ইস্টার্ন কোলফিল্ড লিমিটেড (ইসিএল)-এর ৪ জনকে প্রথমে গ্রেপ্তার করে। পরে একে একে আরও গ্রেপ্তার হন। তাঁদের কাছ থেকে প্রচুর কাগজ এবং আয় বহির্ভূত সম্পত্তি হদিস মেলে। বর্তমানে তাঁরা প্রত্যেকেই উচ্চ আদালতের থেকে জামিন পেয়ে বাইরে আছেন। সিবিআই যখন এই কয়লা পাচার মামলা শুরু করেছিল তখন প্রথম এফআইআরে অনুপ মাঝি ওরফে লালা ছাড়া ইসিএলের একাধিক জিএমের নাম ছিল। এর আগে কয়লা পাচার কাণ্ডে বিকাশ মিশ্র ছাড়াও চার কয়লা ব্যবসায়ী জয়দেব মণ্ডল, গুরুপদ মাঝি সহ চারজন গ্রেপ্তার হয়েছিল। পরে এরাও কয়লা পাচার কাণ্ডে জামিন পান কলকাতার উচ্চ আদালত থেকে।