বালুরঘাট: চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হল জেলা প্রশাসনিক ভবনের এক কর্মীকে। ধৃত বালুরঘাটে অবস্থিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনিক ভবনের কর্মচারী শুভঙ্কর চক্রবর্তী। সে স্বনির্ভর গোষ্ঠী দপ্তরের চতুর্থ শ্রেণির স্থায়ী কর্মী। ধৃতের মা অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষিকা একই অভিযোগে আগেই গ্রেপ্তার হয়েছে। রবিবার রাতে ওই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে বালুরঘাট থানার পুলিশ। সোমবার জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে তাকে।
জানা গিয়েছে, প্রতারিতদের কলকাতায় একাধিকবার নিয়ে যেত ওই মা ও ছেলে। গাড়ি ভাড়া করে একসঙ্গে পাঁচ-সাতজনকে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে হোটেলে রাখা হত। সেখানেই আসত প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে যুক্ত বলে পরিচয় দিয়ে নানা মানুষ। বিভিন্ন ফাইল নিয়ে এসে সেখান থেকে কাগজে সই করানো হত। এভাবেই সকলের বিশ্বাস অর্জন করত মা ও ছেলে বলে অভিযোগ। এক বছর আগে বালুরঘাটের চকভৃগুর বাসিন্দা অরিজিৎ দাস অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষিকা শেফালী চক্রবর্তীর নামে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তোলেন। বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরে তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তের পরে একমাস আগেই ওই অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছেন। অরিজিৎবাবুর অভিযোগের পরে প্রতারিতরা মুখ খুলতে শুরু করেন। গত মাসের শুরুতে রাজুয়া এলাকার বাসিন্দা দিবেস বর্মন মা ও ছেলে দুজনের নামে বালুরঘাট থানায় আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ আনেন। অবশেষে তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে মায়ের পরে এবার জেলা প্রশাসনের স্থায়ী কর্মী ছেলেকেও গ্রেপ্তার করল বালুরঘাট থানার পুলিশ। যদিও অভিযুক্ত ওই যুবক কোনওরকম আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নয় বলে সাফাই গেয়েছেন। এদিন আদালতে পেশ করে বিচারকের কাছে ওই যুবককে ১০ দিনের জন্য হেপাজতে নেওয়ার আবেদন করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ৭ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
অভিযোগকারী অরিজিৎ দাস বলেন, ‘চাকরি দেওয়ার নাম করে আমার কাছ থেকে ৫ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছিল অভিযুক্ত মহিলা। তার নামে থানায় অভিযোগ করেছিলাম। সেই মহিলাকে গ্রেপ্তার আগেই করেছে। এবার তার ছেলেও গ্রেপ্তার হয়েছে। এখন ন্যায় বিচারের আশায় রইলাম।’ অভিযুক্ত শুভঙ্কর চক্রবর্তীর সাফাই, ‘আমি কোনওভাবেই কারও সঙ্গে আর্থিক প্রতারণায় যুক্ত নই।’
বালুরঘাট থানার আইসি শান্তিনাথ পাঁজা জানান, এক বছর আগে করা এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে আরেকজনের অভিযোগ পাওয়াতে সেই কেসের সঙ্গে এটা জুড়ে দেওয়া হয়েছে। যেখানে জেলা প্রশাসনের কর্মী ছেলের নাম উল্লেখ রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। আইন আইনের পথে চলবে।’