গাজোলঃ দীর্ঘদিন ধরে জমির ফসল খেয়ে নষ্ট করে দিচ্ছিল এলাকার গবাদিপশু। বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীরা জোরালোভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন গোরুপালককে। মঙ্গলবার কেউ বা কারা নাকি একটি গোরুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে বলে অভিযোগ। যদিও তার প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নি। এরপরই প্রতিবাদী এক গ্রামবাসীর বাড়িতে ব্যাপকভাবে ভাঙচুর চালায় স্থানীয় জনাকয়েক বাসিন্দা। এই অভিযোগে এদিন আদিবাসী এবং তপশিলি জাতি সম্প্রদায়ের মানুষেরা গাজোল থানায় এসে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে গাজোল -২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রানীপুর গ্রামে।
স্থানীয় এক গ্রামবাসী টুলি রাজবংশী বললেন, তাদের গ্রামের পার্শ্ববর্তী এলাকা বাকসরাই ঘোষপাড়ায় কিছু ঘোষ পরিবার বসবাস করে। যারা গোরু, মোষ এরকম গবাদি পশু পালন করেন। কিন্তু বাড়িতে বেঁধে প্রতিপালন না করে ওই সমস্ত গোরু-মোষগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই গবাদি পশু গুলো দীর্ঘদিন ধরে তাদের জমির ফসল নষ্ট করে আসছে। এই বছর তিনি তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন এবং দুই বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। গোরু মোষগুলো সমস্ত ফসল নষ্ট করে দিয়েছে। শুধু তার জমি নয়, এলাকায় যত জন কৃষক রয়েছেন সকলের জমিরই একই অবস্থা। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ করে আসছেন তাঁরা। কিন্তু প্রতিবাদ জানানোয় লাঠি এবং হাঁসুয়া নিয়ে এসে তাদের ভয় দেখায় ঘোষেরা। গতকাল তাঁরা সপরিবারে ভোট দিতে গেলে সেই সুযোগে তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায় অভিযুক্তরা। এদিনের হামলায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়ি ঘরের।
এলাকার বাসিন্দা নিহার রঞ্জন মণ্ডল জানালেন, দীর্ঘদিন ধরে ঘোষেদের অত্যাচারে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার আদিবাসী এবং তপশিলি জাতি সম্প্রদায় ভুক্ত কৃষকেরা। প্রতিবাদ করলে তাদের জাত তুলে উল্টোপাল্টা গালাগাল করে ঘোষেরা। গতকাল আমাদের গ্রামের এক কৃষক পরিবারের ঘর ব্যাপকভাবে ভাঙচুর করেছে কয়েকজন ঘোষ। তার প্রতিবাদে এদিন আমরা সমস্ত গ্রামবাসী থানায় এসেছি। পাঁচজন ঘোষের নামে লিখিত অভিযোগ ছাড়াও ৫ দফা দাবির ভিত্তিতে গাজোল থানায় ডেপুটেশন দিচ্ছি আমরা।
আমাদের দাবি, ঘোষদের গৃহপালিত পশুগুলোকে বাড়ির মধ্যে বেঁধে পালন করতে হবে। ঘোষদের হাত থেকে বাঁচাতে গ্রামের মানুষদের সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা পুলিশকে করতে হবে। কৃষকদের ফসল নষ্ট করা এবং বাড়ি ভাঙচুর করার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেভাবে কথায় কথায় লাঠি এবং হাঁসুয়া নিয়ে গ্রামবাসীদের ভয় দেখায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এদিনের ঘটনায় নন্দ ঘোষ, পবন ঘোষ, শিব ঘোষ, সমীর ঘোষ এবং তপন ঘোষের নামে গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে গাজোল থানার পুলিশ।