মাটিগাড়া: আবর্জনার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শিলিগুড়ির চম্পাসারির বাসিন্দারা। কঠিন বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ শুরু হলেও মিলছে না সঠিক পরিষেবা। সারাবছরই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের তরফে খোলা জায়গায় আবর্জনা না ফেলার জন্য একাধিক প্রচার করা হয়। অথচ নির্মল গ্রাম হিসেবে পরিচিত চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েতে গেলেই দেখা যায় গলির মোড়ে কিংবা রাস্তার ধারে আবর্জনা পড়ে রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ শুরু হবে বলে প্রায় দেড় বছর কাটিয়ে দেয় নতুন বোর্ড। এরপর ছ’মাস আগে একশো টাকার বিনিময়ে গৃহস্থের আবর্জনা গাড়িতে ফেলার সুযোগ করে দিলেও সবার পক্ষে এই টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া রোজ আবর্জনার গাড়ি না আসায় সেই পরিষেবাও সঠিকভাবে মেলে না। ফলে সমস্যা সেই একই তিমিরে।
এবিষয়ে মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ হরি শর্মা জানান, ছয়টি আবর্জনার গাড়ি নিয়েই এই পরিষেবা শুরু করেছে চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েত। তাই পুরো এলাকায় পৌঁছোতে সময় লাগবে। এছাড়া এই একশো টাকা নেওয়া হয় আবর্জনার গাড়ি চালকদের মাসিক পারিশ্রমিক দেওয়ার জন্য।
চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ২৬ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। তবে বাড়িবাড়ি আবর্জনার গাড়ির সুবিধে পেয়েছে ছয়টি এলাকায়। বৃহস্পতিবার উত্তর পলাশের সুজয় দাস বলেন, ‘আবর্জনার গাড়ির পরিষেবা আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ প্রতিমাসে একশো টাকা করে দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’ একই কথা চম্পাসারির কলাবস্তির স্থানীয়দের। তাঁদের কথায়, প্রথম মাসে গৃহস্থের আবর্জনা জমানোর জন্য ছোট ছোট দুটো ঝুড়ির বিনিময়ে একশো টাকা এবং আবর্জনা নিয়ে যাওয়ার একশো মিলিয়ে মোট দু’শো টাকা নিয়েছিল চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েত। অথচ সেই পরিষেবা দিতে ব্যর্থ তারা।
এদিন হিসেব করে দেখা যায় ছয়টি সংসদে আনুমানিক সাতশো পরিবার থাকলে দাঁড়ায় প্রায় ৪,২০০ পরিবার। যেখান থেকে আবর্জনার গাড়ির পরিষেবা থেকে মোট আয় হচ্ছে ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ছয়জন কর্মীকে নয় হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয়, দুজন কালেক্টরকে ছয় হাজার টাকা এবং একজন সুপারভাইজারকে পনেরো হাজার টাকা দেওয়া হয়। এছাড়া গাড়ির চার্জ মিলিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা পড়ে যায়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে বাকি টাকা কী করছে গ্রাম পঞ্চায়েত?
এই বিষয়ে চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জনক সাহা বলেন, ‘বোর্ড মিটিং করেই এই টাকা ধার্য করা হয়েছে। আমাদের নিজস্ব কোনও ডাম্পিং গ্রাউন্ড নেই। তাই নকশালবাড়িতে সমস্ত আবর্জনা পাঠাতে প্রচুর খরচ পড়ে যায়। তবে মিলন মোড়ে ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরির কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে একশো টাকার সংখ্যা কিছুটা কম হতে পারে।’