আসানসোল: আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ড. সাধন চক্রবর্তীকে তাঁর পদ থেকে বরখাস্তের নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে জানান রাজ্যপালের আইনজীবী। বিচারপতি তা গ্রহণ করেন। অন্যদিকে, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এদিন বিচারপতিকে বলেন, ‘রাজ্য সরকার ও রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরকে অন্ধকারে রেখে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন আচার্য।’
রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার পরে উপাচার্য ড. সাধন চক্রবর্তী বলেন, ‘এই নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বহির্ভূত ও বেআইনি ছিল। আমি গত ৮ বছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে কাজ করেছি। আমার অতিরিক্ত তিন মাসের কাজের সময়সীমা শেষ হওয়ার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি ছিল। এর মধ্যে বেআইনি ওই নির্দেশ দিয়ে আচার্য আমাকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছেন। উপাচার্য ছাড়া আগে আমি অধ্যাপক হিসেবেও যাদবপুরে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছি। কোনও রকম ব্যাখ্যা ছাড়াই আচার্য এভাবে একজন উপাচার্যকে সরিয়ে দিতে পারেন না। এটা অবশ্যই উপাচার্য হিসেবে আমার জয়।’ এটা রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রেও একটা নজির হয়ে থাকবে বলে দাবি উপাচার্যের।
প্রসঙ্গত, ড. সাধন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম সহ একাধিক অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগ দাবি করে গত ১৩ মার্চ থেকে কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন একাংশ অধ্যাপক, অধ্যাপিকা, শিক্ষাকর্মী ও পড়ুয়ারা। আন্দোলনকারীরা তাঁকে প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে দিচ্ছিলেন না। উপাচার্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে পান। তারই মধ্যে আচমকাই গত ১৩ মে শনিবার সন্ধ্যায় ড. চক্রবর্তীকে তাঁর পদ থেকে বরখাস্ত করেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপালের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ১৫ মে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন উপাচার্য। বিচারপতি কৌশিক চন্দ সেদিন রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিয়ে বৃহস্পতিবার মতামত জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
অন্যদিকে, সোমবারই উপাচার্যকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিজেদের নৈতিক জয় বলে দাবি করে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছিলেন অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মী ও পড়ুয়ারা।