গৌরহরি দাস, কোচবিহার: লোকসভা ভোটের আগে নগেন রায়ের (Nagen Roy) ঘর ভাঙছে। তাঁর অনুগামী গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের (জিসিপিএ) (Greater Coochbehar Peoples Association) জনা ১৫-২০ নেতার সঙ্গে সপ্তাহখানেক আগে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কার্যালয়ে ঘাসফুল শিবিরের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের গোপন বৈঠক হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) সঙ্গে শলাপরামর্শ ও নানা দাবি নিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল। বিশেষ সূত্রে খবর, নগেন অনুগামী জিসিপিএ’র একটা বড় অংশ তৃণমূলে যোগ দিতে পারে বা লোকসভা ভোটে তারা ঘাসফুল শিবিরকে সমর্থন করতে পারে।
নগেন অনুগামী জিসিপিএ’র কালচারাল কমিটির প্রাক্তন সহ সম্পাদক তথা বর্তমানে সংগঠনের কর্মী সুমন্ত বর্মন বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের কয়েকশো সদস্যকে হোমগার্ডের চাকরি দেবেন বলে গত বছর সিদ্ধেশ্বরীতে আমাদের সভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এসব সহ আমাদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। নগেন রায় বিজেপিতে গেলেও আমাদের সদস্যদের মত নিয়ে যাননি। সংগঠন করে যা উন্নতি হওয়ার শুধু তাঁরই হয়েছে। তিনি ৮০ লক্ষ টাকা দামের গাড়ি চড়েন। আমাদের মতো সাধারণ সদস্যদের কিছুই হয়নি। এসব নিয়েই আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই।’ বছরখানেক আগে নগেন অনুগামী জিসিপিএ’র অফিস সেক্রেটারির পদে থাকা পরেশ বর্মন বললেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী খুবই মানবিক। তাঁর কোচবিহারে আসার বিষয়টিকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আমাদের জন্য উনি যে সমস্ত প্রতিশ্রুতি করেছিলেন আশা করি উনি সেগুলি পূরণ করবেন।’ রবিবার বহু চেষ্টা করেও নগেনের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব না হওয়ায় তাঁর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
উত্তরববঙ্গের ভোটে রাজবংশী ফ্যাক্টর বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ। এই রাজবংশী ভোটের মূল অংশই নগেন অনুগামী জিসিপিএ-তে রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই ভোট বিজেপির পাশে থাকাতেই গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে কোচবিহারে তৃণমূলের ভরাডুবি হয়। এটা বোঝার পর গত বিধানসভা ভোটের পর থেকেই তৃণমূল নগেনের ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে। পরিস্থিতি দেখে বিজেপি নগেনকে রাজ্যসভার সাংসদ করে। তবে বিষয়টিকে নগেনের সংগঠন ভালোভাবে নেয়নি। সংগঠনের নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশের কাছে নগেনকে কেন্দ্র করে নানা মিথ ভাঙতে শুরু করেছে। সংগঠনের অনেকেই নগেনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খোলা শুরু করেছেন। পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে তাতে নগেনের রাজনৈতিক কেরিয়ার প্রবল চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।