উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ২০১৯ বিশ্বকাপের বদলা নিল ভারত। এবার সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে চলে গেল টিম ইন্ডিয়া। এদিন প্রথমে ব্যাট করে রানের পাহাড় গড়ে রোহিতরা। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩৯৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা রাখে ভারত। ব্যর্থ হয়ে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার মিচেলের লড়াই। বিপক্ষের ব্যাটিং লাইন আপে একাই ধস নামিয়ে দেন মহম্মদ সামি। ভারতের করা ৩৯৭ রান তুলতে গিয়ে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস শেষ হয়ে যায় ৩২৭ রানে। কিউইদের হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয় টিম ইন্ডিয়া। ৭০ রানে জয় হাসিল করে ভারত। একাই ৭ উইকেট নিলেন মহম্মদ সামি।
বুধবার ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় ভারত ও নিউজিল্যান্ড। এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শুভমান গিলকে সঙ্গে নিয়ে ওপেন করতে এসে প্রথম থেকেই ব্যাটে ঝড় তুলতে শুরু করেন রোহিত শর্মা। ২২ গজে বিধ্বংসী মেজাজে দেখা যায় হিটম্যানকে। টিম সাউদির বলে নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাত্র ২৯ বলে ৪৭ করে সাজঘরে ফেরেন হিটম্যান। ইনিংসে ছিল ৪টি করে ছয় ও চার। রোহিত ও শুভমান গিলের জুটিতে ৮.২ ওভারে ওঠে ৭১ রান।
রোহিত আউট হতেই মাঠে নামেন বিরাট কোহলি। কোহলি ও গিলের ব্যাটের সুবাদেচ ১৫ ওভার শেষে ভারতের রান দাঁড়ায় ১ উইকেটে ১১৮ রান। দুজনে ধরে খেলতে থাকেন। মুম্বইয়ের আর্দ্রতা সামলাতে পারলেন না শুভমান। পায়ের পেশিতে টান ধরার ফলে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন শুভমান। তাঁর জায়গায় নামলেন শ্রেয়স আয়ার। কোহলির সঙ্গে সমানতালে ব্যাট চালিয়ে খেলতে থাকেন শ্রেয়স। এরই মাঝে নিজের ৫০ তম শতরান করে ফেলেন বিরাট। ৮টি চার এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে শতরান করেন বিরাট। সাউদির বলে ডেভন কনওয়েকে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১১৭ রান করে আউট হন কোহলি। আউট হতেই নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারেরা এসে কোহলিকে অভিবাদন জানান। গোটা ওয়াংখেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানাল বিরাটকে। ইডেনে ৪৯তম শতরান করেছিলেন বিরাট। শচিনকে ছুঁয়েছিলেন সেই মাঠে। এ বার টপকে গেলেন মুম্বইতে। এক দিনের ক্রিকেটে শতরানের চূড়ায় উঠে পড়লেন কোহলি।
এদিন শতরান করেন আয়ারও। ৬৭ বলে শতরান করলেন তিনি। নেদারল্যান্ডসের পর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় শতরান করেন তিনি। ৫০তম ওভারের প্রথম বলে সূর্যকুমারকে ফেরান সাউদি। এরপর ম্যাচ শেষ করতে মাঠে ফের নামেন শুভমন গিল। শেষ অবধি ৮০ রানে গিল অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। এবং ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন লোকেশ রাহুল। ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৯৭ রান তোলে ভারত।
৩৯৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নামে নিউজিল্যান্ড। বল করতে এসে পরপর দুটি উইকেট তুলে নেন মহম্মদ সামি। এদিন তিনি প্রথম বলেই তুলে নেন কনওয়ের উইকেট। ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ ক্যাচ ধরেন উইকেটকিপার রাহুল। দ্বিতীয় ওভারেও উইকেট পান সামি। এ বার সামির বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হন রাচিন (১৩)। মিচেল ৮৫ বলে পূর্ণ করেন শতরান। খুবই খারাপ ফিল্ডিং হয়েছে ভারতের। বুমরার বলে উইলিয়ামসনের সহজ ক্যাচ ফেললেন সামি। এরপরই দ্রুত গতিতে রান তুলতে শুরু করেন মিচেল ও উইলিয়ামস। যাঁর ক্যাচ ফেলেছিলেন সেই উইলিয়ামসনকে ফেরালেন সামি। মিড-অনে তাঁর ক্যাচ ধরলেন সূর্য। এই ওভারেই সামি তুলে নেন লাথামের উইকেট। থেমে যায় রানের গতি। ৩৩ বলে ৪১ রান করে বুমরাহর বলে আউট হন ফিলিপ্স। লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মিচেল। এবার বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে আউট হন নিউজিল্যান্ডের চ্যাপম্যান। এবার উইকেট পতন মিচেলের। ১১৯ বলে ১৩৪ রান করে সাজঘরে ফিরলেন এই কিউই ব্যাটার। তাঁকে ফেরালেন মহম্মদ সামি। এরপর আর লড়ার মত রসদ ছিল না কিউয়িদের কাছে।
বল হাতে সামি নেন সাতটা উইকেট। একটা করে উইকেট নেন জসপ্রীত বুমরাহ, মহম্মদ সিরাজ ও কুলদীপ যাদব। ম্যাচের সেরা হন মহম্মদ সামি।