জ্যোতি সরকার, জলপাইগুড়ি: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সদর ব্লকের সাকাতি নেকিপাড়ার বাসিন্দারা দুই দেশের ভোটার। তাঁরা যেমন ভারতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন, তেমনি ভোট দেন বাংলাদেশেও। দুই দেশেরই সচিত্র পরিচয়পত্র রয়েছে ওই গ্রামের বাসিন্দা মইরুদ্দিন, মোশারফ, অয়ুব, কামরুল, আনারুল, জয়উদ্দিন, হাসিবুলদের কাছে।
সীমান্ত এলাকার এই গ্রামের গা ঘেঁষে রয়েছে বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার চাকলা ইউনিয়ন বোর্ড। সাকাতি নেকিপাড়ার বাসিন্দাদের বাড়ির এক অংশ পড়েছে ভারতীয় ভূখণ্ডে এবং অপর অংশ বাংলাদেশ ভূখণ্ডে। এই গ্রামে আন্তর্জাতিক সীমারেখা নির্ধারণের কাজ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তাই দীর্ঘদিন ধরেই এই ব্যবস্থা চলে আসছে। গ্রামের ছেলেমেয়েদের বেশিরভাগই চাকলা ইউনিয়ন বোর্ডের স্কুলগুলিতে পড়াশোনা করে। গ্রামে মোট বাসিন্দা রয়েছেন প্রায় ৫০ জন। গ্রামবাসীরা সাকাতি সিএস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৭/২৩৫ নম্বর বুথে ভোট দেন। বেরুবাড়ি থেকে অনুপম কলোনি অতিক্রম করে পশ্চিম সাকাতির রাস্তা ধরেই সাকাতি নেকিপাড়া যেতে হয়। গ্রামে ঢুকতে প্রয়োজন হয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর অনুমতি। গ্রামের প্রবেশপথেই রয়েছে গেট। সেখানে সীমান্তরক্ষীদের সতর্ক নজর থাকে সব সময়েই। গ্রামটির জমিও বেশ উর্বর। ধান, পাট, টমেটো, লংকা ইত্যাদি ফসলের চাষ হয় গ্রামে। সীমান্তরক্ষীদের অনুমতি নিয়ে গ্রামের বাসিন্দারা হলদিবাড়ি বাজারে গিয়ে তাঁদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে আসেন।
রবিবার এই গ্রামেই নির্বাচনি প্রচারে যান তৃণমূল কংগ্রেসের (TMC) নগর বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতারা। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকার জমাদারপাড়া, সিংপাড়া সহ আরও কয়েকটি গ্রামে এদিন তৃণমূলের প্রচার চলে। সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত ওই গ্রামগুলির বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের নেতাদের ওই এলাকায় এখনও পর্যন্ত প্রচারে দেখা যায়নি। রাজ্যের শাসকদলের নেতাদের কাছে পেয়ে এদিন বাসিন্দারা তাঁদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এদিন ওই এলাকায় নির্বাচনি প্রচারে গিয়ে রাজ্যের শাসকদলের রাজ্য সম্পাদক দীপেন প্রামাণিক বলেন, ‘সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের সমস্যা সমাধানে রাজ্য সরকার তৎপর হলেও কেন্দ্র সরকার হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে। ঘর তৈরির জন্য বালি-পাথর, সিমেন্ট সংগ্রহ করতে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। বিষয়টি খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’ এদিন সীমান্তের গ্রামগুলিতে তৃণমূলের প্রচার চলার সময় সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর জওয়ানদের সতর্ক নজরদারি লক্ষ করা গিয়েছে।