ময়নাগুড়ি: ময়নাগুড়ি(Maynaguri) শহরের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের জরদা সেতুটি(Jarda Bridge) দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেতু বিপজ্জনক বলে উত্তরবঙ্গ সংবাদে খবর প্রকাশিত হলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ওই সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। দু’বছর পেরিয়ে গিয়েছে এখনও পর্যন্তু সেতুটি সংস্কার করা হয়নি। কেবলমাত্র ডিটেলড প্রোজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করার জন্য টেন্ডার করা হয়েছে বলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর। যদিও নতুন সেতু তৈরি হবে নাকি পুরোনো সেতুটিকেই মেরামত করা হবে এবং কবে নাগাদ সে কাজ শুরু হবে, এই সব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। সেতু বন্ধ থাকায় নানা সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয়রা। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ময়নাগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান অনন্তদেব অধিকারী। তাঁর কথায়, ‘আমরা দ্রুত সেতু নির্মাণের কথা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। সেতু বন্ধ হয়ে থাকায় শহরের সমস্যা বাড়ছে।’
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি বন্ধ থাকায় নানা সমস্যায় পড়েছেন এলাকাবাসী। শহরের এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা স্থানীয় ব্যবসায়ী দুলাল মণ্ডল বলেন, ‘এই সেতু পেরিয়েই নতুন বাজার ও হাসপাতালে যেতে হয়। সেই কবে সেতু বন্ধ করে দেওয়া হল। কিন্তু সংস্কারের কোনও খবর নেই।’ দোমোহনির বাসিন্দা পেশায় কৃষিজীবী উপেন রায়ের ক্ষোভ, ‘কৃষিজ পণ্য হাটে নিয়ে যেতে হয়। সেতু বন্ধ থাকায় হাটের দিনে বেশ সমস্যা হয়।’
ইংরেজ আমলে তৈরি এই সেতুটিকে সেবক করোনেশন ব্রিজের আদলে বানানো হয়েছিল। বন্ধ সেতুর পাশেই বাম আমলে তৈরি আরও একটি সেতু রয়েছে। ১৯৯৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ওই সেতুর উদ্বোধন করেন তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী ক্ষিতি গোস্বামী। তখন জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছিলেন রতনলাল মুখোপাধ্যায়। বর্তমানে এই সেতু দিয়েই যাতায়াত চলছে। এদিকে পুরোনো সেতুটি দু’বছর ধরে বন্ধ থাকার পেছনে রাজ্য সরকারের গাফিলতিকেই দায়ী করছেন বিরোধীরা। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক চঞ্চল সরকারের কথায়, ‘রাজ্য সরকারের গাফিলতি রয়েছে তাই সেতু সংস্কার করতে এত বিলম্ব হচ্ছে।’
জরদা সেতু পেরিয়েই ময়নাগুড়ি বাস টার্মিনাস। পুরোনো সেতুটি বন্ধ থাকায় টার্মিনাসের ভেতরে বাস প্রবেশেও প্রবল সমস্যা দেখা দিয়েছে। বাস টার্মিনাসের ইজারাদার জানান, সারাদিনে হাতেগোনা কয়েকটি বাস টার্মিনাসের ভেতরে ঢোকে। কবে সেতুটিকে সংস্কার করে ফের চালু করা হবে তা নিয়ে সন্দিহান শহরবাসী। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের (এনএইচনাইন) এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবব্রত ঠাকুরের বক্তব্যে এই সন্দেহ আরও বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘ডিপিআর কনসালট্যান্ট লাগানোর জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। এখনও কিছুই ফাইনাল হয়নি।’
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ত রাস্তার ওপর ওই সেতু। প্রতিনিয়ত যানবাহন সহ অ্যাম্বুল্যান্সের যাতায়াত লেগেই থাকে। ময়নাগুড়ি পুরোনো বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহকারী সম্পাদক সুমিত সাহা সেতুটি দ্রুত সংস্কারের জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।