সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

কমল চাকরি বাতিলের সংখ্যা! ৩৬ হাজার চাকরি খারিজের নির্দেশ বদলে দিলেন বিচারপতি

শেষ আপডেট:

কলকাতা: সম্প্রতি প্রাথমিকে ৩৬,০০০ প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের যুগান্তকারী নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সেই রায় সংশোধন করে নিলেন বিচারপতি। তিনি জানালেন, ‘সংখ্যাটা ৩২ হাজারের কাছাকাছি হবে।’ অর্থাৎ, প্রাথমিক শিক্ষকের বাতিল হওয়া চাকরির সংখ্যা কমল।

প্রসঙ্গত, প্রাথমিকের ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের রায়ে মুদ্রণজনিত ত্রুটি হয়েছে জানিয়ে বিচারপতির কাছে আবেদন করা হয়েছিল। এদিন সেই আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, দু’টি ভুলের কথা বলা হয়েছিল। দু’টি ভুলই সংশোধন করা হবে। রায়ের ‘টাইপোগ্রাফিক্যাল’ ভুল নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মামলকারীদের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। প্রথমটি ছিল, প্যানেলের সর্বনিম্ন নম্বর রায়ে লেখা হয়েছে ১৪.১৯১। দ্বিতীয় ভুলটি ছিল, ৩৬ হাজারের নিয়োগে ত্রুটি হয়নি। সংখ্যাটা কিছুটা কম। এদিন বিচারপতি চাকরি বাতিলের সংখ্যা কমার পাশাপাশি এও জানান, সর্বনিম্ন নম্বর সংশোধন করে হবে ১৩.৭৯৬।

এক ধাক্কায় ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়ে যায় রাজ্যে। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে ২০১৬ সালে নিযুক্ত হয়েছিলেন ৪২ হাজার ৫০০ শিক্ষক। এই নিয়োগে ইন্টারভিউতে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এমনকি নিয়োগ পরীক্ষায় অ্যাপটিটিউড টেস্টও নেওয়া হয়নি বলে ইন্টারভিউয়াররাই বিচারপতির কাছে সাক্ষ্য দিয়ে জানান। রাজ্যকে তিনমাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে তা শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে তাঁদের মধ্যে কেউ ইতিমধ্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকলে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাঁরাও অংশ নিতে পারবেন বলে জানান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি রায়ে এও জানান, আগামী ৪ মাস চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষকরা স্কুলে যেতে পারবেন। তবে পার্শ্বশিক্ষকের বেতনের হারে বেতন পাবেন।

ন’বছর আগের টেটের নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে আদালতে মামলা করেছিলেন নিয়োগ না পেয়ে অপ্রশিক্ষিত চাকরিপ্রাথী প্রিয়াংকা নস্কর সহ আরও ১৪০ জন। তাঁদের হয়ে মামলা করেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তিনি দাবি করেছিলেন, এই প্যানেলের ৪২ হাজার ৫০০ জনের নিয়োগ হয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকে মেধার ভিত্তিতে সঠিকভাবেই চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু বাকিদের চাকরি নিয়ে তদন্তের দাবি জানান তিনি।

মামলাকারীরা আদালতে জানিয়েছিলেন, সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে নম্বর বিভাজন সহ তালিকা প্রকাশ হয়েছে। সেই তালিকায় দেখা যাচ্ছে তাঁদের থেকে কম নম্বর পেয়েও অনেক অপ্রশিক্ষিত প্রার্থী চাকরির সুপারিশপত্র পেয়েছেন। এই মামলার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর আগে এই মামলার শুনানিতেই হাইকোর্টে ডেকে আনা হয়েছিল মানিক ভট্টাচার্যকে। আলাদা করে মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথাও বলেন বিচারপতি।

Sushmita Ghosh
Sushmita Ghoshhttps://uttarbangasambad.com/
Sushmita Ghosh is working as Sub Editor Since 2018. Presently she is attached with Uttarbanga Sambad Digital. She is involved in Copy Editing, Uploading in website and various social media platforms.

Share post:

Popular

More like this
Related

Debangshu Bhattacharjee | ভোটের আগে ব্ল্যাকমেল করে কোনও লাভ হবে না, হুমায়ুন কবিরকে কড়া বার্তা দেবাংশুর         

বহরমপুর: ভোট আসলেই দলকে ব্ল্যাকমেল করতে ময়দানে নেমে পড়েন...

Raiganj | দাগি হয়েও ইন্টারভিউতে ডাক চাকরিহারা শিক্ষককে! গোপন ব্যাপার ফাঁস করে দিলেন স্ত্রী

দীপঙ্কর মিত্র,রায়গঞ্জ: ‘দাগি’ শিক্ষকের তালিকায় নাম থাকা সত্বেও এবার...

Delhi Blast | গাড়ির রেজিস্ট্রেশন আমিরের নামেই! গ্রেপ্তার দিল্লি বিস্ফোরণে মূল অভিযুক্ত ডঃ উমরের সহযোগী

উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লিতে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩...