কালিয়াগঞ্জঃ রাজনৈতিক মৃত্যু! নাকি অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ধারাবাহিক রাজনীতি? প্রায় এক বছর ধরে উত্তর খুঁজছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের রাধিকাপুর। কোনও ভোট আসলেই চর্চায় উঠে আসে পুলিশের গুলিতে নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মন। অভিযোগ, একজন খাকি পোশাকধারী পুলিশকর্তার বন্দুকের নল থেকে বেরোনো কার্তুজ চিরতরে ঘুম পাড়িয়ে দেয় তরতাজা যুবক মৃত্যুঞ্জয়কে। নিমেষের মধ্যে মৃত মৃত্যুঞ্জয় হয়ে ওঠেন নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের ট্রাম্পকার্ড। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগে চাকরি পেয়েছেন মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রী গৌরি। বাপ হারা ছোট ছেলেটির শিক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে ভারত সেবাশ্রম সংঘ। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর বিচার? আজও মৃত্যু রহস্য উন্মোচনে পরিবারের সিবিআই তদন্তের দাবি, দাবিতেই আটকে।
মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি চলছে, চলবেও। এবারের নির্বাচনে রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে যখন তৃণমূল প্রচারের হাতিয়ার বানিয়েছে, তখন মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুকে ফের প্রচারের হাতিয়ার করে মানুষের ভোট নিজেদের ঘরে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি। রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কার্তিকচন্দ্র পাল প্রচারের শুরুতেই মৃত্যুঞ্জয়ের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন। দেখা করেন তাঁর পরিবারের সঙ্গে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার আর গৌরির চোখের জলে কে জেতে, সেটাই এখন দেখার।
মৃত্যুঞ্জয়ের তুতো বৌদি তথা কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্যা কণিকা রায় বর্মন বলছেন, ‘গৌরিও ভোট প্রচারে বাড়ি বাড়ি যাবে। তৃণমূল আমলে আমার দেওরকে রাতের অন্ধকারে গুলি করে পুলিশ খুন করল। কিন্তু আজও তার বিচার হল না। এটাই মানুষের কাছে তুলে ধরছি।’
তৃণমূলের জেলা নেত্রী দীপা সরকারের বক্তব্য, ‘গৌরির প্রতি আমরাও সহমর্মী। বিজেপি প্রার্থী বলছেন, তিনি জিতলে যা উন্নয়ন হবে তা দলের ইস্তেহারে প্রকাশিত হবে৷ ভোট এখন দোড়গোড়ায়। কোথায় তাদের ইস্তেহার? আসলে মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুকে হাতিয়ার করে রাধিকাপুর অঞ্চলে নোংরা রাজনীতি করছে বিজেপি৷’
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শুধু মৃত্যুঞ্জয় নয়, রাধিকাপুর অঞ্চলে শাসকদলের আশ্রয় নিয়ে হৃষ্টপুষ্ট হয়ে উঠছে বালি মাফিয়া থেকে শুরু করে গোরু, কাফ সিরাপ পাচারকারীরা। তবে যত দোষ নন্দ ঘোষের মতো তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রচার চললেও বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত থাকাকালীন কীভাবে এমন ঘটনা ঘটছে? এনিয়েও কিন্তু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।