কালিয়াগঞ্জঃ লোকসভা ভোট হোক বা বিধানসভা অথবা পঞ্চায়েত ভোট, প্রতি ভোটেই গৌরীর সঙ্গী ছিল তাঁর স্বামী মৃত্যুঞ্জয়। গত পঞ্চায়েত ভোটে গভীর রাতে বন্দুকের নল থেকে বেরিয়ে যাওয়া গুলি গৌরীর জীবনের অভিমুখ বদলে দেয়। তাঁর এবং তাঁর পরিবারের দাবি, বিনা প্ররোচনায় পুলিশ গুলি করে মৃত্যুঞ্জয়কে খুন করেছে। দোষীদের শাস্তি চেয়ে শুক্রবার নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করলেন স্ত্রী গৌরী।
নাগরিক অধিকার প্রয়োগের পর গৌরী বলেন, ‘ঠিক এক বছর আগে আজকের দিনে গভীর রাতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারাতে হয়েছিল স্বামীকে। আজ গোটা রাধিকাপুর সঠিক বিচারের দাবিকে সামনে রেখে ভোট দিয়েছে।’ গৌরীর দাবি, স্বামী বিজেপি করত বলে পুলিশ তাঁকে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে। তারপর থেকে ন্যায় বিচারের দাবিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন গৌরী। শুক্রবার নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করে মৃত্যুঞ্জয়-জায়া বার্তা দিলেন শেষ দেখে তিনি ছাড়বেন।
এই ঘটনায় রাজ্য-রাজনীতির পারদ চরমে ওঠে। সময়ের হাত ধরে বাকি ঘটনা যেমন ফিকে হয়ে যায়, এই ঘটনাও ফিকে হয়েছে। তবে গৌরীর এখনও মনে পড়ে সেই ভয়ংকর রাতের ঘটনা। একই দাবিতে নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করেছে মৃত নাবালিকার মা, বাবা। নাবালিকার কাকার কথায়, ‘ভাইজির মৃত্যুর ন্যায্য বিচারের দাবিতে আজ আমাদের এলাকার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে।’
গত পঞ্চায়েত ভোট এবং এবারের লোকসভা ভোটে কালিয়াগঞ্জের নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুন এবং মৃত্যুঞ্জয়ের খুনে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে মুখর হয়েছিল বিজেপি। বিজেপি ছোট বড় নেতাদের মুখে তো বটেই, রায়গঞ্জ কেন্দ্রের প্রার্থী কার্তিকচন্দ্র পালের প্রচারে বারবারে উঠে আসে এই প্রসঙ্গ। মৃতদের সমাধিস্থলে গিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায়।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগামী ৪ জুন সকালেই বোঝা যাবে কালিয়াগঞ্জের মানুষ দুটি অনভিপ্রেত মৃত্যুর ন্যায্য দাবিতে ভোট দিল নাকি, উন্নয়নের পক্ষে ভোটদান করলেন।