উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কলিঙ্গ সুপার কাপে (Kalinga super cup) মোহনবাগানকে (Mohun bagan) ৩-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে গেল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal)। শুক্রবার ওডিশার (Odisha) ভুবনেশ্বরের (Bhubaneswar) কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে (Kalinga Stadium) কলিঙ্গ সুপার কাপের ডার্বিতে (derby) মুখোমুখি হয় মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এবং ইস্টবেঙ্গল। এই ম্যাচের ওপরেই নির্ভর করছিল কোন দল পৌঁছবে সেমিফাইনালে। সেমিতে যেতে হলে সবুজ-মেরুনকে জিততেই হত। ড্র হলেও চলত লাল হলুদের। কিন্তু সুপারকাপে ডার্বিতে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে হারিয়ে কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে মশাল জ্বালিয়ে দিল ইস্টবেঙ্গল। এদিন ১৯ মিনিটের মাথায় মোহনবাগানের হয়ে প্রথম গোল করেন হেক্টর ইউস্তে। ২৪ মিনিটের মাথায় খেলায় সমতা ফেরায় ইস্টবেঙ্গল। গোল করেন ক্লেইটন সিলভা। ৬৩ মিনিটের মাথায় ফের গোল করে এগিয়ে যায় লাল হলুদ ব্রিগেড। গোল করেন নন্দকুমার। ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। ৮০ মিনিটের মাথায় আরও একটি বল মোহনবাগানের জালে জড়ায় ইস্টবেঙ্গল। গোল করেন ক্লেইটন সিলভা। ইস্টবেঙ্গল ৩-১ গোলে মোহনবাগানকে পরাস্ত করে কলিঙ্গ সুপার কাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে যায়।
নতুন বছরের প্রথম ডার্বি নিয়ে এদিন ছিল টান টান উত্তেজনা ছিল দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে। শেষমেশ ওডিশার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে পর্যুদস্ত করে জয় হাসিল করল ইস্টবেঙ্গল। আপাতত এএফসি এশিয়ান কাপ চলছে। আর ভারতীয় দলে আছেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের সাতজন খেলোয়াড়। সেই বিষয়টি নিয়ে যথেষ্টই চিন্তায় ছিলেন সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের সহকারী কোচ ক্লিফোর্ড। তাছাড়া চোটের জন্য মাঠের বাইরে আছেন আনোয়ার আলি এবং আশিক কুরিয়ান। একই কারণে লাল হলুদেরও দুই ফুটবলার রয়েছেন জাতীয় দলে। তবুও এদিন মাঠে সমানে সমানে টেক্কা দিতে দেখে খেলোয়াড়দের।
এদিন খেলা শুরুর দু’মিনিটেই ইস্টবেঙ্গলের জালে বল ঢুকিয়ে দেন মোহনবাগানের আর্মান্দো সাদিকু। সেলিব্রেশনে মেতে ওঠার আগেই ফ্ল্যাগ তুলে অফসাইড ঘোষণা করেন লাইন্সম্যান। মাঠেই সাদিকুকে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায়। এদিন ১৯ মিনিটের মাথায় প্রথম গোল করে দলকে এগিয়ে দেন মোহনবাগানের হেক্টর ইউস্তে। গোল খেয়েই নড়েচড়ে বসে লালা হলুদ ব্রিগেড। পালটা আক্রমণে গোলের সুযোগ করে দেয় ইস্টবেঙ্গলের সৌভিক চক্রবর্তী। সৌভিকের বাড়িয়ে দেওয়া বলে গোল করতে ব্যর্থ হন নন্দকুমার। কিন্তু বেশিক্ষণ আর পিছিয়ে থাকতে হয়নি ইস্টবেঙ্গলকে। গোল হজম করার পাঁচ মিনিটের মধ্যেই গোল শোধ করে দিল ইস্টবেঙ্গল। খেলার ২৪ মিনিটের মাথায় বক্সের বাইরে ডানপায়ে দুর্দান্ত শটে বিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দেন ক্লেইটন সিলভা। মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ১-১ ইস্টবেঙ্গল।
২৯ মিনিটের মাথায় মোহনবাগান বক্সের মধ্যে পড়ে যান নন্দকুমার। ড্রিবলিং করে বক্সের মধ্যে জায়গা তৈরির চেষ্টা করছিলেন তিনি। বল পায়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অভিষেকের ধাক্কায় বক্সে পড়ে গেলেও পেনাল্টি দেননি রেফারি। তবে প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে পেনাল্টি আদায় করে সবুজ মেরুন ব্রিগেড। কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন দিমিত্রি পেত্রাতোস। সেইসঙ্গে প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার বাঁশি বাজান রেফারি। খেলার ফলাফল ১-১।
খেলার ৬৩ মিনিটের মাথায় আরও একটি গোল করে এগিয়ে যায় লাল হলুদ। মোহনবাগানের খেলোয়াড় রবির ভুলে বল পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গলের বোরহা। গোললাইন ছেড়ে এগিয়ে আসেন মোহনবাগান গোলকিপার। বোরহার জোরাল শট বারপোস্টে লাগে। ফিরতি বলে গোল করে বেরিয়ে যান নন্দকুমার। ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল।
২-১ গোলে পিছিয়ে যাওয়ার পর মরিয়া গোল করার মরিয়া চেষ্টা দেখা যায় সবুজ মেরুন ব্রিগেডকে। পালটা মোহনবাগানের বক্সে আক্রমণ শানায় লাল হলুদ। ৮০ মিনিটের মাথায় আরও একটি গোল করেন ইস্টবেঙ্গলের ক্লেইটন সিলভা। গোলরক্ষকের জঘন্য ভুলে তৃতীয় গোলটি খেতে হল মোহনবাগান জায়ান্টকে। ৩-১ গোলে হেরেই মাঠ ছাড়তে হয় ক্লিফোর্ডের দলকে।
কলিঙ্গ সুপার কাপের গ্রুপ ‘এ’-র শীর্ষে থেকেই ইস্টবেঙ্গল পৌঁছে গেল শেষ চারে। তিনটি ম্যাচ খেলেছে। তিনটি ম্যাচেই জিতেছে লাল হলুদ। পয়েন্ট নয়। অন্যদিকে, মোহনবাগান সুপার জায়ান্টও তিনটি ম্যাচ খেলেছে। দুটিতে জিতলেও তৃতীয় ম্যাচে এদিন হেরে যাওয়ায় তাঁদের পয়েন্ট ছয়।