সুভাষ বর্মন, ফালাকাটা: ধারাবাহিকভাবে উত্তরবঙ্গ সংবাদে প্রকাশিত খবরের জেরে এবার ফালাকাটার কালীপুরের শতায়ু লোকশিল্পী (Folk Artist) কান্দুরি বর্মনকে পলাশবাড়ির শিলবাড়িহাট ললিতকলা অ্যাকাডেমির তরফে স্মারক দিয়ে সম্মান জানানো হল৷ এই শিল্পী ও পরিজনদের অভিযোগ, এতদিনেও কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের তরফে কোনওরকমের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। অথচ কান্দুরি বর্মনের গোটা জীবনটাই বিষহরা (পদ্মপুরাণ) গান নিয়ে। তাই শুক্রবার নাচ, গান নিয়ে কাজ করা ওই সংস্থার প্রতিনিধিরা বাড়িতে এসে শিল্পীকে সম্মান জানান। শিল্পীর গানও শোনেন। সরকারিভাবে না পেলেও বেসরকারিভাবে এই সম্মান মেলায় শিল্পী ও পরিবারের লোকজন খুশি।
এদিন সকালে পলাশবাড়ির ওই অ্যাকাডেমির প্রতিনিধি দিবাকর দত্ত, প্রণবকুমার সেন, অভিভাবক শ্যামল সরকার ও বিকাশ বর্মন শিল্পীর বাড়িতে আসেন। সবাই শিল্পীর পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন। তারপর ওই অবস্থাতেই শিল্পীকে উত্তরীয় পরানো হয়। হাতে তুলে দেওয়া হয় স্মারক। এছাড়াও ফলমূল, মিষ্টির প্যাকেট দেওয়া হয়। দিবাকর দত্তের কথায়, ‘একশো বছরের কাছাকাছি বয়সের মানুষ আজকাল পাওয়া যায় না। তারপর এই বৃদ্ধা তো প্রতিভাবান লোকশিল্পী। তাই তাঁর পা ছুঁয়ে প্রণাম করি। তিনি আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে বিষহরা গানও শোনান।’ এমন একজন শিল্পী সরকারিভাবে স্বীকৃতি বা সম্মান না পাওয়ায় পলাশবাড়ির ওই সংস্থার প্রতিনিধিরাও অবাক। প্রণবকুমার সেনের বক্তব্য, ‘আমাদের সংস্থায় শিশুদের নাচ, গান শেখানো হয়। তাই সংস্কৃতিচর্চার বিষয়টি আমরা বুঝি। এক্ষেত্রে লোকশিল্পকে যিনি এতদিন ধরে বাঁচিয়ে রেখেছেন তাঁর সরকারি সম্মান কেন জুটল না সেটাই প্রশ্ন।’ এমন সম্মান পেয়ে খুশি কান্দুরি বর্মন। তাঁর কথায়, ‘এতদিন কেউ খোঁজ করেনি। এখন রোজ কেউ না কেউ আসছেন। সরকারি সম্মান তো পাইনি। এদিন পলাশবাড়ির লোকজন এসে সম্মান জানানোয় ভালো লাগল।’ শিল্পীর ছেলে সুকারু বর্মনও ওই সংস্থার প্রতিনিধিদের সাধুবাদ জানিয়েছেন। সম্প্রতি বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন কান্দুরি বর্মন। এখন অবশ্য কিছুটা সুস্থ। তিনি একসময় উত্তরবঙ্গের নানা প্রান্তে বিষহরা গান করে বেড়িয়েছেন। তাঁর গানের দলও ছিল। কিন্তু এখন শিল্পীর কেউ খোঁজ রাখে না। এমন খবর প্রকাশিত হতেই ফালাকাটার জনপ্রতিনিধিরা অবশ্য বাড়িতে এসে শিল্পীকে নানাভাবে সহযোগিতা করেন।