নাগরাকাটাঃ ক্লাশ রুমের সামনে তখন পেল্লায় সাইজের ফণা পাকিয়ে ফোঁসফোঁস করছে ১৪ ফুটের কিং কোবরা। মাটি থেকে ফুট পাঁচেক উঁচুতে ওই ফণা প্রথম দেখেন মিড ডে মিলের রাঁধুনিরা। তাঁদের তখন মূর্ছা যাওয়ার জোগাড়। ইতিমধ্যেই ক্ষুদে পড়ুয়াদের নজরেও চলে আসে এমন দৃশ্য। কান্নাকাটির রোল পড়ে যায় গোটা স্কুল জুড়ে। ঘটনার খবর চাউর হতেই ঘটনাস্থলে ভিড় জমাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। ভিড় জমতেই দিশেহারা হয়ে পড়ে সাপটি। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে সাপটিও নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ক্লাসরুমের দিকে যেতে শুরু করে। সেই সময় ক্লাসে ছিল পড়ুয়াদের ভিড়। মারাত্মক অঘটনের আশঙ্কায় প্রধান শিক্ষক দীপক ছেত্রী ঝুঁকি নিয়ে কিং কোবরাটির পথে রুখে দাঁড়ান। এরপর সাপটি সটান উঠে পড়ে শ্রেণীকক্ষের বাইরের বারান্দার সিলিংয়ে। এই ফাঁকে সমস্ত পড়ুয়াকে ক্লাস রুম থেকে বের করে আনা হয়। খবর দেওয়া হয় বন দপ্তরকে। পরে নাগরাকাটার সর্পপ্রেমী সইদ নইম বাবুন ও তাঁর এক সহকারী ফরিদুল হক এসে টানা ৩ ঘন্টার চেষ্টায় সাপটিকে সিলিং থেকে নামিয়ে আনেন। ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে গোটা এলাকার। হাড়হিম করা ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সকালে নাগরাকাটা টিজি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রধান শিক্ষক দীপক ছেত্রী বলেন, “একবার যদি ক্লাস রুমে ঢুকে পড়ত কি যে হত ভাবলেই শিউরে উঠছি। সেসময় ওই একটি শ্রেণীকক্ষেই প্রাক প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণীর পড়ুয়াদের সবাই ছিল। এমন ঘটনা যাতে আর কোথাও না ঘটে ভগবানের কাছে সেই প্রার্থনাই করছি”।
নাগরাকাটা চা বাগানের সুখনবাড়ি লাইনের ওই প্রাথমিক স্কুলের ভেতর কিং কোবরা-র মত মারাত্মক বিষধর সাপধর সাপ ঢুকলো কোথা থেকে। এর কোন সদুত্তর নেই কারও কাছেই। বন দপ্তরের খুনিয়া রেঞ্জের রেঞ্জার সজল দে বলেন, সম্ভবত লাগোয়া জঙ্গল থেকেই সাপটি আসে। সৈয়দ নইম বাবুন এর আগেও একাধিক কিং কোবরা উদ্ধার করেন। তাঁর অনুমান ভুটান থেকে এখন প্রচুর এই ধরনের সাপ আসছে। নাগরাকাটা চা বাগান থেকে ভুটানের দূরত্ব কিন্তু খুব বেশি নয়।
এদিন সাপ কান্ডে পন্ড হয়ে যায় স্কুলের পড়াশোনা। এমনকি প্রভাব পড়ে চা বাগানের কাজকর্মে। কোনরকমে মিড ডে মিল খাইয়ে আতঙ্কিত পড়ুয়াদের ছুটি দেওয়া হয়। উদ্ধার হওয়া কিং কোবরাটিকে বন দপ্তরের সহযোগিতায় সইদ নইম গরুমারার জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে