উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কুর্মিদের গ্রামে দলীয় পতাকা লাগাতে এসে মহিলাদের ঘাড়ধাক্কা খেলেন এক তৃণমূল নেতা। তৃণমূল নেতা স্থানীয় অঞ্চল সভাপতি। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামে দোরখুলি গ্রামে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এমন ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কুর্মিদের অভিযোগ, এদিন সকালে তৃণমূলের রাধানগর অঞ্চল সভাপতি বিদ্যুৎ ঘোষ দলবল সঙ্গে নিয়ে দোরখুলি গ্রামে এসে তাণ্ডব চালায়। সেই সময় কুর্মিদের পতাকা মাটিতে ফেলে দেন অঞ্চল সভাপতি। সেই সঙ্গে গ্রামবাসীদের গুলি করে খুন করার হুমকি দেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণার আগেই তৃণমূল কংগ্রেসকে বয়কটের ডাক দিয়েছিল আদিবাসী কুর্মি সমাজ। তাদের কেউ তৃণমূলের হয়ে লড়াই করবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এমনকী কোনও রাজনৈতিক দলের জন্য কুর্মিদের বাড়ির দেওয়ালও ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছিল তারা। ফলে কুর্মি অধ্যুষিত গ্রামগুলি থেকে প্রার্থী দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে তৃণমূল। তাই অন্যান্য আদিবাসী সমাজ থেকে কুর্মিদের গ্রামগুলিতে প্রার্থী দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে বলেই বিরোধীদের দাবি।
জানা গিয়েছে, এদিন সকালে তৃণমূলের রাধানগর অঞ্চল সভাপতি বিদ্যুৎ ঘোষ দলবল সঙ্গে নিয়ে দোরখুলি গ্রামে আসেন নির্বাচনী প্রচারে আসেন। কুর্মিদের অভিযোগ গ্রামে এসেই অঞ্চল সভাপতি তাণ্ডব চালায়। সেই সময় কুর্মিদের পতাকা মাটিতে ফেলে দেন তিনি। সেই সঙ্গে গ্রামবাসীদের গুলি করে খুন করার হুমকি দেন। ওই সময়েই তাদের আটকাতে তেড়ে যান গ্রামের মহিলারা। তৃণমূলের ওই অঞ্চল সভাপতি ও তাঁর দলবলকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে গ্রাম থেকে বের করে দেন। এরপর গ্রামের বাইরেও ওই তৃণমূল নেতাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। খবর পৌছে যায় পুলিশের কাছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অঞ্চল সভাপতিকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালেও চিঁড়ে ভেজেনি। উল্টে কুর্মিদের পতাকা অবমাননার অভিযোগে অশান্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পরে পুলিশ পতাকা তুলে দেওয়ার আশ্বাস দিলে, গ্রামবাসীরা ওই বিদ্যুৎ ঘোষ ও তাঁর দলবলকে ছেড়ে দেয়। পরিস্থিতি সামলাতে গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
দোরখুলি গ্রামের ঘটনা নিয়ে বিরোধীরা সবর। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সোনালী মূর্মূ জানান, ‘এখন যাঁরা তৃণমূলে রয়েছেন, আগে তাঁদের কাছে একটা সাইকেল কেনার পয়সা ছিল না। কিন্তু এখন তাঁরাই স্করপিও চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। মানুষের সঙ্গে যারা দুর্নীতি করে, তাদের কেউ ছেড়ে কথা বলবে না।’
যদিও শালতোড়ের বিধায়ক বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘আমরাও শান্তিপূর্ণ ভোট চাই। দলের কেউ যদি হুমকি দিয়ে ভোট করাতে চায়, তাহলে দল তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।’