ময়নাগুড়ি: বর্তমানে ফার্স্ট ফ্লাশের চা পাতা তোলার কাজ চলছে বাগানগুলিতে। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে এবারের উৎপাদন চরম ক্ষতির মুখে। উৎপাদনে ৩৫ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে। শুধু তাই নয়, সেকেন্ড ফ্লাশেও উৎপাদনে ঘাটতির আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি, জলসেচ সহ বাগান পরিচর্যায় মোটা টাকা গুনতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে, ক্ষুদ্র চা চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে৷
চায়ের উৎপাদনের ৬০ শতাংশই আসে ছোট চা বাগানগুলি থেকে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে অনাবৃষ্টিতে ক্ষুদ্র চা চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। উৎপাদন একেবারেই নগণ্য। এর আগেও ৩০ শতাংশ ঘাটতিতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল ক্ষুদ্র চা চাষিদের। এই অবস্থায় এখনও বৃষ্টি না হওয়ায় ফার্স্ট ফ্লাশ চা উৎপাদনে লোকসানের পাশাপাশি সেকেন্ড ফ্লাশের উৎপাদনেও ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ময়নাগুড়ি ব্লকের এক ক্ষুদ্র চা চাষি আনন্দ দেবনাথ বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাড়তি জলসেচে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে তো হচ্ছেই, পাশাপাশি বৃষ্টির অভাবে চা গাছে রোগপোকার আক্রমণ বাড়ায় গাছ পরিচর্যায় বাড়তি সময় ও খরচ করতে হচ্ছে। কিন্তু এতকিছু করেও উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা নেই।’
ময়নাগুড়ি ব্লকের পানবাড়ি, রামশাই, আমগুড়ি, সাপ্টিবাড়ি, ব্যাংকান্দি, ভোটপট্টি, দোমোহনি, চূড়াভাণ্ডার, পদমতী, ধর্মপুর, হেলাপাকড়ি, মাধবডাঙ্গার মতো বিভিন্ন এলাকায় প্রচুর ক্ষুদ্র চা বাগান রয়েছে। সমস্ত বাগানেই জলসেচে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন চাষিরা। ইতিমধ্যে রেড স্পাইডার, গ্রিন ফ্লাই, চা মশার উপদ্রব বেড়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে আরও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে বলে তঁাদের বক্তব্য।
জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘জেলাজুড়ে ক্ষুদ্র চা চাষিদের সত্যিই কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। রোদের তাপে চা বাগানের পাতা ঝলসে যাওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে। এই অবস্থায় সরকারি সহযোগিতা না পেলে ক্ষুদ্র প্রান্তিক চাষিরা আরও বিপদে পড়বেন।’ তিনি জানান, গত মাসে চালসায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিমা যোজনার পাশাপাশি জলসেচের জন্য পাম্পসেটের দাবি জানানো হয়েছিল। ভোটের পর এব্যাপারে সরকার কোনও পদক্ষেপ করে কি না, সেই অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা।