আসানসোল: ফের ধস ইসিএলের কয়লা খনিতে। চাঙড় ভেঙে মৃত্যু হল একজনের। জখম আরও ২ জন। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে পশ্চিম বর্ধমান জেলার ইসিএলের অন্ডাল থানার বহুলা কোলিয়ারির রিয়েল জামবাদ ইউনিটের পিট নম্বর ১ কয়লা খনিতে।
এদিন সকালে প্রথম শিফটে কাজ করতে গিয়েছিলেন মাইনিং সর্দার সারদা চরণ মোহান্তি (৪৮)। তাঁর সঙ্গে যান দুই খনি কর্মী মনোজ ভূঁইয়া (৩০) ও আশুতোষ মাজি (৫৫)। তাঁরা কয়লা খনির ভেতরে ৩১ নম্বর ডিপের ২১ নম্বর লেবেলে কাজ করছিলেন। হঠাৎই লেগিংয়ে (কয়লার অভ্যন্তরে ফাঁপা অংশকে বলা হয়) কয়লার চাল বা ড্রেসিং ও ড্রিল করে ঝাড়াই করার সময় চাঙড় ধসে পড়ে। একটা বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে ধস নামায়, সেই কয়লার নীচে চাপা পড়ে যান ওই তিন খনি কর্মী। ঘটনার পর খনিতে থাকা অন্য কর্মীরা খনি আধিকারিকদের টেলিফোন মারফত খবর দেন। কিন্তু জখমদের উদ্ধার করে আনার মতো কোনও স্ট্রেচার না থাকায়, বস্তার মধ্যে তাদেরকে ভরে খনি কর্মীদের দীর্ঘ পথ ট্রলিতে করে প্রায় দেড় ঘন্টা পর খনির ওপরে নিয়ে আসা হয়। এদিকে এই ঘটনার খবর জানতে পেরে, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা ও কর্মীরা, ঘটনাস্থলে পৌঁছান। কী কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটল তা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা।
বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের দাবি, আধিকারিকদের গাফিলতির জেরে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান তাঁরা। এ নিয়ে ডিজিএমএস পর্যায়ে তদন্তের দাবিও তোলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরী, জামুরিয়ার বিধায়ক হরেরাম সিং, পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তারা এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেন।
শ্রমিক সংগঠনের নেতারা জানান, খনির ভেতরে কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি খনি কর্তৃপক্ষ। নেই কোনও চিকিৎসার পরিকাঠামো। যার জেরে খনি কর্মীদের ব্যাপক দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। যদিও এবিষয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় জখম তিনজনকে ছোঁড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সারদাচরণ মোহান্তিকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকিরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার তদন্ত চলছে।