উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: মহিলারা সাধারণত যে সব ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হন, তাদের মধ্যে পঞ্চম স্থানে ওভারির ক্যানসার। কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই রোগ ধরা পড়ে একেবারে শেষের দিকে, তাই আক্রান্তদের অনেকেই তার পর আর বেশিদিন বাঁচেন না। ওভারিয়ান ক্যানসার একটিমাত্র রোগ নয়, এটি বেশ কয়েকটি রোগের সমষ্টি। গাইনোকোলজিকাল অঙ্কোলজিস্ট ও মেডিকাল অঙ্কোলজিস্টদের ধারণা, সংখ্যাটা আসলে আরও অনেক বেশি এবং ওভারিয়ান ম্যালিগন্যান্সিতে আক্রান্তের হার বাড়ছে।
সাধারণত ৪০ বছরের আগে ওভারিয়ান ক্যানসার হয় না, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকিও বাড়ে। গবেষণায় প্রকাশ, যারা মেদবহুল অথবা যাঁদের ওজন বেশি, তাঁদের এই অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি। ৩৫-এর পর যাদের সন্তান হয়, বা যাঁরা কখনওই পূর্ণ সময় গর্ভধারণ করেননি, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ক্যানসারের আশঙ্কা বেশি। যারা উর্বরাশক্তির হার বাড়ানোর জন্য ওষুধ খান, তাঁদের ওভারিয়ান টিউমার হওয়ার আশঙ্কা বেশি। পাঁচ বা দশ বছর ধরে যে সব মহিলা প্রোজেস্টেরন ছাড়াই ইস্ট্রোজেন নিচ্ছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই রোগের আশঙ্কা বেশি। ওভারিয়ান ক্যানসার, ব্রেস্ট ক্যানসার বা কোলোরেক্টাল আগে যাঁদের বংশে হয়েছে তাঁদের ওভারিয়ান ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়ে। শুধু মায়ের দিক থেকে নয়, বাবার দিক থেকেও এ রোগ পেতে পারেন কোনও মহিলা। কোলোরেক্টাল বা ব্রেস্ট ক্যানসার থাকলেও ওভারির ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পাঁচ থেকে দশ শতাংশ পরিবারের ক্যানসার সিনড্রোম দেখা দেয় কয়েকটি জিনের মিউটেশন থেকে। সুস্থ অবস্থায় এগুলি এমন একটি প্রোটিন উৎপাদন করে যা ক্যানসার ঠেকিয়ে রাখে, মিউটেশনের পর এরা সে ক্ষমতা হারায়। এই সিনড্রোমের ফলে ওভারিয়ান, ফ্যালোপিয়ান টিউব ইত্যাদির ক্যানসার বাড়ে।
ব্রেস্ট ক্যানসার হয়েছে যাদের, তাঁদের ওভারিতে ক্যানসারও হতে পারে। যে সব মহিলা সরাসরি যৌনাঙ্গে বা ঋতুকালে স্যানিটারি ন্যাপকিনে ট্যালকম পাউডার ছড়িয়ে ব্যবহার করেন, তাঁদের কারসিনোমা হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। যারা যৌনাঙ্গে পাউডার ব্যবহার করেন, তাঁদের ওভারিতে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা সামান্য হলেও বেশি। আগে পাউডারে অ্যাবেসটস বলে একটি উপাদান থাকত যা ক্যানসারের কারণ বলে সন্দেহ করা হয়।
ওভারির ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর উপায়
জন্মনিরোধক কনট্রাসেপ্টিভ পিল খেলে ওভারিয়ান ক্যানসারের ঝুঁকি কমে। এমনকী, পিল খাওয়া বন্ধ করলেও এই প্রভাব বেশ কিছুকাল বজায় থাকে। জন্মনিয়ন্ত্রক লাইগেশান অপারেশন এবং হিস্টেরেক্টমি এবং ওভারির অপারেশনের পরেও ঝুঁকি কমে। লো ফ্যাট ডায়েটের মাধ্যমেও ওভারিয়ান ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো যায়।