শিলিগুড়ি: সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে পরিচয়। স্কেটিংয়ের প্রতি ভালোবাসা এক করেছে জলপাইগুড়ির আশিস সমাদ্দার (২৫), জগন্নাথ রায় (২২) এবং শিলিগুড়ির কৃষ্ণ বর্মনকে (২২)। তিনজনের কারও স্কেটিংয়ের প্রথাগত প্রশিক্ষণ নেই। যতটুকু শিখেছেন সবটাই ইউটিউবে ভিডিও দেখে। ইউটিউব দেখে বাড়ির পাশের রাস্তায় স্কেটিং করা শিখেছেন তিন তরুণ। এবার সেই শিক্ষাকে সম্বল করে বৃহস্পতিবার কেদারনাথের পথে যাত্রা শুরু করলেন তিনজন।
এদিন নিক্যাপ, হাতমোজা, টুপি পরে শিলিগুড়ির আশিঘর মোড় থেকে রওনা দেন তাঁরা। ব্যাগে ছিল জামাকাপড় সহ কিছু ওষুধপত্র এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। আনুমানিক ১৫ দিনের মাথায় কেদারনাথ পৌঁছে যাবেন, এই পরিকল্পনা নিয়েই রওনা দিয়েছেন কৃষ্ণ, আশিস, জগন্নাথরা। স্কেটিং করে খানিকটা রাস্তা এগিয়ে দিতে এসেছিলেন তাঁদের আরেক বন্ধু।
প্রায় তিন বছর ধরে শেখার পর কেদারনাথ যাত্রার পরিকল্পনা নেন তাঁরা। এই তিনজনের মধ্যে একমাত্র জগন্নাথই এর আগে স্কেটিংয়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই প্রথম এত দূরত্বের যাত্রা নিয়ে আনন্দ যেমন রয়েছে, সেইসঙ্গে কিছুটা ভয়ও কাজ করছে বলে জানালেন কৃষ্ণ। তাঁর কথায়, ‘স্কেটিংটা ছোটবেলা থেকে ভালো লাগে। এতবড় যাত্রায় নেমেছি, কী হবে জানি না। শুধু মহাদেবের নাম নিয়ে পথে বেরিয়ে পড়েছি।’ পরিবারের সকলের সহযোগিতা এবং উৎসাহ ছাড়া এই যাত্রা কোনওদিনই শুরু হত না বলে জানালেন জলপাইগুড়ির বাসিন্দা জগন্নাথ। শুধু পরিবার নয়, এলাকার বাসিন্দারাও উৎসাহ দিয়েছেন তাঁদের।
প্রতিদিন ঘণ্টাদুয়েক স্কেটিং প্র্যাকটিস করেন আশিস। ফেসবুকে বাকি দুজনের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তারপরেই একজোট হয়ে এত বড় সিদ্ধান্ত। আশিস বলেন, ‘আমরা নিজেদের সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়েই বেরিয়েছি। এরপর গুগল ম্যাপই আমাদের ভরসা। রাস্তায় যেখানে জায়গা পাব, বিশ্রাম নেব।’ কঠিন পাহাড়ি পথে কীভাবে স্কেটিং করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে জগন্নাথ বললেন, ‘শিলিগুড়ি সংলগ্ন ছোট ছোট পাহাড়ি পথে এর আগে আমরা উঠেছি। তবে সফল না হলে আবার চেষ্টা করব। তিনজনই যাতে সুস্থ, নিরাপদ থাকতে পারি, সেটাই চাইছি।’ কেদারনাথ যাত্রা সফল হলে অযোধ্যা যাত্রায় যাবেন বলে জানান এই তিন তরুণ। গোটা দেশ স্কেটিংয়ের মাধ্যমে ঘোরার স্বপ্নপূরণ করবে বলে হাসিমুখে বলছিলেন কৃষ্ণ।