উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পিছনে ফেলে রাজ্যে তৃণমূলের জয়জয়কার হলেও, বাংলার শাসক দলের মুখ পুড়ল ভিনরাজ্যে। রাজ্যের বাইরে যে ৬টি আসনে তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছিল তার ৬টিতে হার হল তাদের। একের পর এক রাজ্যে অভিযান চালিয়ে তৃণমূলের জাতীয় দল হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলার বাইরে ভোটে না জেতা। ফলে তৃণমূলের জাতীয় দলের স্বীকৃতি কেড়ে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। লোকসভা নির্বাচনেও পশ্চিমবঙ্গের বাইরে ঘাসফুল ফোটাতে ব্যর্থ হয়েছে তৃণমূল। এবার রাজ্যের বাইরে যে ৬টি আসনে তৃণমূল প্রার্থী দিয়েছিল তার ৬টিতে হার হল তাদের।
জাতীয় দলের তকমা আদায় করতে এবারের লোকসভা নির্বাচনে স্বপ্ন দেখেছিল তৃণমূল।উত্তর প্রদেশে তৃণমূলকে ১টি আসন ছেড়েছিলেন সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব। ভদোহি আসনে তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দিতা করেন ললিতেশপতি ত্রিপাঠী। তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দিতা করলেও মূলত তৃণমূলের প্রার্থী বাছাই থেকে প্রচার যাবতীয় কাজ করেছিলেন সেখানকার সামজবাদী পার্টির প্রার্থীরা। উত্তর প্রদেশে ইন্ডিয়া জোটের ব্যাপক সাফল্যের মধ্যেও সেই আসনটি দখল করতে পারেনি তৃণমূল। বিজেপি প্রার্থী বিনোদ কুমার বিন্দের কাছে প্রায় ৪৪ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। ললিতেশপতি সেখানে পেয়েছেন ৪ লক্ষ ১৬ হাজার ভোট।
উত্তরপ্রদেশের থেকেও তৃণমূলের খারাপ ফল হয়েছে অসমে। অসমে চারটি আসনে প্রার্থী দিলেও কোনও দাগ কাটতে পারেনি তৃণমূল। অসমের বরপেটা আসনে তৃণমূল প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ পেয়েছেন ১৬,৫০০ ভোট। ওই আসনে জিতেছে অসম গণপরিষদ। বাঙালি অধ্যুষিত শিলচর আসনে তৃণমূল প্রার্থী রাধেশ্যাম বিশ্বাস পেয়েছেন ২০ হাজার ৫০০ ভোট। কোকরাঝাড় আসনে তৃণমূল প্রার্থী গৌরীশংকর শরণিয়া পেয়েছে ২৩ হাজার ৫০০ ভোট। লখিমপুর আসনে তৃণমূল প্রার্থী ঘনকান্ত চুতীয়া পেয়েছেন ১৪ হাজার ১৯৭টি ভোট। অর্থাৎ অসমের চারটি কেন্দ্রেই জামানত জব্দ হয়েছে তৃণমূলের।
এছাড়া মেঘালয়ের তুরা আসনেও প্রার্থী দাঁড় করায় বাংলার শাসকদল। সেখানে জেনিথ সাংমাকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। ৪৮৭০০ ভোট পেয়ে ওই আসনে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সাল থেকেই তৃণমূল নিজেদের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে গোয়া ও ত্রিপুরায়। কিন্তু দলের ভরাডুবি হওয়ায় সেই রাজ্যগুলিতে নির্মূল হয়ে যায় বাংলার শাসকদলের অস্তিত্ব। এবারও লোকসভা নির্বাচনে অসমের চারটি আসনে প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল তৃণমূল। দলীয় প্রার্থীকে জেতাতে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচারে গিয়েছিল অসমে। সেরাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের মতো লক্ষ্মীর ভান্ডার সহ একাধিক প্রকল্পের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এলেও তৃণমূলের দিকে মুখ তুলে চায়নি অসমের মানুষজন। ফলে অসমের চারটি কেন্দ্রেই জামানত জব্দ হয়েছে তৃণমূল প্রার্থীদের।